ksrm-ads

১৯ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা : সরকারি বাসায় থাকছে বহিরাগতরা

রেলওয়ের কর্মকর্তাদের অব্যবস্থাপনা ও পরিদর্শনের অভাবে রেলওয়ের জায়গায় যত্রতত্র গড়ে উঠছে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা, দোকান-পাট ও বসতি। খালি নেই সংস্থাটির কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাসায় কাজ করা গৃহকর্মীদের বসবাসের জন্য নির্মিত বর্ধিত ঘরগুলোও। যা রেলওয়ের আউট হাউস নামে পরিচিত।

রেলওয়ের বেশ কিছু অসাধু কর্মচারীর ইন্ধনে গৃহকর্মীদের আবাসস্থল ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা। ওই সকল স্থাপনায় রয়েছে অবৈধ পানি ও বৈদ্যুতিক সংযোগ। এতে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেলওয়ের ক্ষতি হলেও পকেট পুরছে এই সংস্থারই বেশ কিছু অসাধু কর্মচারীর।

এমনই দূরাবস্থা চোখে পড়ে সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং তথা সিআরবির ফ্রান্সিস রোডে অবস্থিত এফ-২৮ ভবনটি পরিদর্শন করলে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  ভবনের মোট ছয়টি ফ্ল্যাটের একটিতেও কোনো কর্মকর্তা থাকেন না। অথচ ওই ভবনের পেছনের আউট হাউসকে ঘিরে চলছে রমরমা ব্যবসা। কর্মকর্তা না থাকায় সেই বাংলোর আউট হাউস খালি থাকার কথা থাকলেও কোনো এক অসাধু চক্র ওই সকল আউট হাউস বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।

খবর নিয়ে জানা যায়, ওই সকল আউট হাউসে বসবাসকারী গৃহকর্মী ও তাদের পরিবারের লোকজন দীর্ঘ অনেক বছর যাবত এখানেই বসবাস করছেন।  তারা জানান, এফ-২৮ বাংলোর কর্মকর্তারা বাসা ছাড়ার পর থেকে রেলওয়ের আই ডব্লিউ অফিসের কর্মচারী কামাল মাসিক আটশো টাকা করে ভাড়া নেয়। তবে গত মাসে কামাল ভাড়া বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করে চাইলে এই নিয়ে আউট হাউসে বসবাসকারী গৃহকর্মীদের সাথে কামালের বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।

পরে কামাল তার আই ডব্লিউ অফিসের লোকজন সহ এসে আউট হাউসে বসবাসকারী সকলকে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দিলে ওই এলাকার কথিত যুবলীগ নেতা মো: মনির এসে তাদের বাধা দেয়।

এ ঘটনায় রেলওয়ের আই ডব্লিউ অফিসের কর্মচারী কামালের সাথে কথা হলে তিনি জানান,  এফ-২৮ বাংলোর কর্মকর্তারা না থাকায় আউট হাউসে বসবাসকারী সকলকে তাদের বাসা ছাড়ার নির্দেশ দিলে তারা আমার উপর চড়াও হয়।  ওই এলাকার কথিত যুবলীগ নেতা মনিরকে নিয়ে এসে আমাদের কাজে বাধা দেয়।
তবে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে ভাড়া নেওয়া কথা জানতে চাইলে আই ডব্লিউ অফিসের কর্মচারী কামাল বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।

কামালের কথার প্রেক্ষিতে সিআরবি এলাকার তথাকথিত যুবলীগ নেতা মো মনিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,  ওরা গরিব মানুষ, অনেক বছর ধরেই এখানে বসবাস করছে। হুট করে এদের বের করে দিলে এরা কোথায় যাবে।  তাই মানবিক দিক চিন্তা করে ওদের আরো কিছুদিন থাকতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আউট হাউসে বসবাসকারী একজন গৃহকর্মী বলেন,  আগে আমরা পাঁচশ টাকা করে ভাড়া দিতাম।  পরে আই ডব্লিউ অফিসের কামাল কয়েক দফায় ভাড়া বাড়িয়ে একহাজার টাকা করে চাইলে আমরা প্রতিবাদ করি। আমরা প্রতিবাদ করায় কামাল এখন আমাদের বের করতে উঠেপড়ে লেগেছে।

সম্পূর্ণ বিষয়টি পর্যালোচনা করে রেলওয়ের আই ডব্লিউ অফিসের ইনচার্জ আতিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রেলওয়ে বাংলোতে যতদিন কর্মকর্তা থাকবে ততদিন আউট হাউসে কর্মচারীরা থাকতে পারবে। যেহেতু এফ-২৮ বাংলোতে কোনো কর্মকর্তা নেই সেহেতু আউট হাউসে কারো থাকার অনুমতি নেই।

আউট হাউস ভাড়া দিয়ে টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই আফিসে নতুন এসেছি।  তবে আউট হাউস ভাড়া দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ