কক্সবাজার প্রতিনিধি »
আর মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হলেই ২০২২ সালের শেষ দিকে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে উল্লেখ করে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে কক্সবাজারে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারকে জমি দিচ্ছেন অনেকে।প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থে এসব জমি নিচ্ছেন আর এর বিপরীতে দিচ্ছে তিনগুণ ক্ষতিপূরণ। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল রেল পথ। অনেকে কথা দিয়ে কথা রাখেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠনে মানুষের জন্য রেলপথ নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। মনে রাখতে হবে এটি শুধু কক্সবাজারের না পুরো দেশের সম্পদ। আর রেল আসলে আন্তর্জাতিকভাবে আরও সমাদৃত হবে কক্সবাজার। এতে পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক চিত্র। রেলকে কেন্দ্র করে স্বাবলম্বী হবে মানুষ।
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) ‘দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্পে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিগ্রস্তদের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী আরও বলেন, দীর্ঘবছর ধরে রেলকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। একটি অকেজো ও পরিত্যক্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল রেল মন্ত্রণালয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে সেদেশ পিছিয়ে থাকে, এটি গভীরভাবে অনুধাবন করেই যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্ভাবনাময় এ খাতকে (রেলপথ) সচল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রেল মন্ত্রণায়লকে আলাদা করে ইতোমধ্যে দেশের সকল জেলায় রেল পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছেন তিনি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কক্সবাজারে চলমান রেলপথ নির্মাণ কাজ প্রায় ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ শেষ হলেই ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এখানকার রেলপথ।
মন্ত্রী সুজন বলেন, ভবিষ্যতে সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। এসময় আর অধিগ্রহণ না হয় মতো কাজ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে ডাবল করলে নতুন করে অধিগ্রহণ করতে হবে না। উন্নয়নের জন্য রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ রাজনীতিবিদদের ডিঙিয়ে কোন উন্নয়ন সম্ভব না। তাই সবার ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর জনকল্যাণমূলক এই প্রকল্প অচিরেই আলোর মুখ দেখবে ইনশাল্লাহ।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, জাফর আলম এমপি, কানিজ ফাতেমা মোস্তাক এমপি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, রেলওয়ে মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আমিন আল পারভেজের সঞ্চালনা চেকবিতরণ অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্পের অধিগ্রহণ প্রায় ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আর বাকি আছে ৩৫ শতাংশ।পর্যায়ক্রমে সবাইকে ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদানে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ২৮ জন ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৩ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়। তারমধ্যে চকরিয়া পালাকাটা-মেধাকচ্ছপিয়া মৌজার ২৭ জন ও কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা মৌজার ১ জন চেক গ্রহণ করেন।
বাংলাধারা/এফএস/এআর