অন্তর্বর্তী সরকারের দূর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম (বীর প্রতীক) কক্সবাজারের উখিয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ডব্লিউএফপি পরিচালিত ই-ভাউচার আউটলেট, রোহিঙ্গাদের রেশন উত্তোলন কার্যক্রম, হোপ উইমেন হসপিটাল, ইউএনএইচসিআর-সেলফ রিলায়েন্স এন্ড লাইভহোড প্রজেক্ট পরিদর্শন করেন তিনি। এছাড়াও রোহিঙ্গা মাঝি, মৌলভী ও রোহিঙ্গা নারী এবং এনজিও কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন বলে জানিয়েছে রোহিঙ্গা শিবিরে দায়িত্বরত আইনশৃংখলা বাহিনী সুত্র।
সূত্র জানায়, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৪ নাম্বার রোহিঙ্গা শিবিরে যান। সেখানে ডব্লিউএফপি পরিচালিত ই-ভাউচার আউটলেট কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। ওই সময় প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা ই-ভাউচার কার্যক্রম সম্পর্কে ব্রিফিং করেন। পরে তিনি রোহিঙ্গাদের রেশন উত্তোলন কার্যক্রম ও বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
সকাল ১১ট হতে বেলা ১২টা পর্যন্ত তিনি ৪ নাম্বার ক্যাম্পের সাব ব্লকের এ/৫ এর হোপ উইমেন হাসপাতালে অবস্থান ও হাসপাতালের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং চিকিৎসকরা রোহিঙ্গাদের সাথে কী ধরণের আচরণ করেন সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা নেন। পরে উপদেষ্টা হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথেও মতবিনিময় করেন। ওই সময় উপদেষ্টা কোন ধরণের বৈষম্য না করে সবাই মিলে প্রত্যেক স্তরের মানুষকে উত্তম সেবা দেয়ার আহবান জানান।
বেলা ১২টার পর উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম ৫ নাম্বার রোহিঙ্গা শিবিরে ইউএনএইচসিআরের অর্থায়নে এনজিও ফোরাম পরিচালিত সেলফ রিলায়েন্স এন্ড লাইভহুড প্রজেক্ট পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে থাকা কর্মকর্তাদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন।
পরে তিনি রোহিঙ্গা মহিলাদের পাটের তৈরি ব্যাগ ও ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন দ্রব্য পর্যবেক্ষণ করেন। ওই প্রতিষ্ঠানে তৈরি দ্রব্যাদি বিদেশে রপ্তানির ব্যাপারে সেখানকার কর্মকর্তারা উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন।
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে দূর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা বেলা সাড়ে ১২টায় ৮ নাম্বার রোহিঙ্গা শিবিরে সিআইসি কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে রোহিঙ্গা মাঝি, মৌলভী ও নারীদের সাথে মতবিনিময় করেন। ওই সময় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
পরে উপদেষ্টা একই কনফারেন্স রুমে রোহিঙ্গা শিবিরে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত এনজিও প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করেন। এই আলোচনা শেষে বেলা দেড়টার দিকে তিনি বড়ইতলী চেকপোষ্ট হয়ে রোহিঙ্গা শিবির ত্যাগ করে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
উপদেষ্টার সাথে এসব কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব মো. কামরুল হাসান, একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসান সারওয়ার, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং রোহিঙ্গা শিবিরে দায়িত্বরত ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল ও ৮ এপিবিএন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. আমির জাফর।