ksrm-ads

৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ksrm-ads

লকডাউনে মিলছে না কোনো সুফল, বেড়েছে দিন মজুরদের দুর্ভোগ

শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত »

সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও চলছে লকডাউন। চলছে না দূর পাল্লার যানবাহন। বন্দর নগরীর অভ্যন্তরেও চলছে না গণপরিবহন। রিকশা কিংবা হেঁটেই কর্মস্থলমুখী মানুষের যাতায়াত। তবে লকডাউনে মিলছে না কোনো সুফল, প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়া শ্রমজীবি এবং খেঁটে খাওয়া মানুষেরও বেড়েছে দুর্ভোগ।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে আক্রান্তে সংখ্যা ৪১৪ এবং মারা গিয়েছেন এক জন। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি অসহায় এবং খেটে খাওয়া মানুষরা কর্মহীন থাকায় দিন পার করছেন। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নিয়মিত মুজুরি নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলোকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকেই বদলি হিসেবে কাজ করতেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাড়ায়, কলোনীত। যে কাজ পেতেন তা করে সংসার চালাতেন। লকডাউনের ফলে কপালে জুটছে না কোনো কাজ, পরিবারের সদস্যরাও আছেন না খেয়ে।

টাইগারপাস এলাকার কালাম উল্লাহ বাংলাধারাকে বলেন, আমি প্রতিদিন কাজের আশায় চট্টগ্রাম নগরীর চাদগাঁও এলাকায় যাই। সেখানে কিছু মানুষের বাড়িতে বদলি হিসেবে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে আমার সংসার চলে। কিন্তু লকডাউনের ফলে কাজও বন্ধ এবং যাতায়াত খরচ অনেক বেশী হওয়ায় কাজে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

অনদিকে নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় কোদাল ও ডালি নিয়ে কাজের আশায় বের হওয়া মমিন, জসিম, আবদুস সালাম নামে তিন শ্রমিককে কাজ না পেয়ে ঘরে ফিরে যেতে দেখা যায়।

বাংলাধারাকে তারা জানান, লকডাউনের ফলে আমাদের কাজ বন্ধ রয়েছে। নগরীর ফিরিঙ্গবাজার, অভয়মিত্রঘাট এলাকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতাম। কিন্তু লকডাউনে এখন কাজ বন্ধ।

লকডাউন উপেক্ষা করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অনেক শ্রমজীবী মানুষ জীবিকা নির্বাহের আশায় বসেছেন টং নিয়ে। নগরীর দুই নম্বর গেইট এলাকার খায়ের হোসেন জানান, টং দোকান করে আমার সংসার চলে। দুই মেয়ে, স্ত্রী এবং ছোট্ট একটা ছেলে নিয়ে পরিবার। যদি টং দোকানে বসে দু’পয়সা আয় করতে না পারি অনাহারে আমাদের মরতে হবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ (২০১৭) অনুযায়ী দেশে মোট ৬ কোটি ৮ লাখ লোক মজুরির বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজে আছেন। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৭ লাখ ৪ হাজারই এমন অনানুষ্ঠানিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ (কাজের নিশ্চয়তা নেই) কাজ করেন। অন্য ব্যক্তিরা অনানুষ্ঠানিক খাতের। বিগত বছরগুলোতে এই সংখ্যা ক্রমশও বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনায় ভয়াবহতায় এসব মানুষগুলোর জীবিকাও হুমকিতে। দিন মুজুর এসব মানুষের পরিবারগুলোকে প্রতিনিয়ত করতে হয় বেঁচে থাকার সংগ্রাম। তবে চট্টগ্রামের বিভিন্নস্থানে চলমান সরকারি প্রকল্পগুলোতে শ্রমিক সংকট নেই বলে জানা যায়।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব দাস বাংলাধারাকে জানান, সরকারের চলমান প্রকল্পগুলাতে কাজের কোনো কার্তি নেই। এসব প্রকল্পে শ্রমিকরা দীর্ঘমেয়াদে কাজ করে থাকেন। ফলে এখন তাদের মুজুরি নির্ধারিত থাকে। তবে করোনকালীনসময়ে নির্মাণসহ অন্যান্য কাজে শ্রমিক সংকট যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে কাজেরও সংকট।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন