নিজস্ব সংবাদদাতা, লামা »
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় মর্মান্তিক ও ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাস্থলে ১৩ জন এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দু’জন মারা যায়।
বর্তমানে চমেক হাসপাতালে ১জন ও লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া সরকারি হাসপাতালে আরো দু’জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহত ১৫ জনের মধ্যে ৩ জনই লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
শনিবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা লবণবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী লেগুনা পরিবহনের (স্থানীয় ভাষায় ছারপোকা) মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য তথা চুনতি বন রেঞ্জ কার্যালয়ের নিকটস্থ ঝুঁকিপূর্ণ জাঙ্গালিয়া বাঁকে মর্মান্তিক ও ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়।
নিহত ১৫ জনের মধ্যে লামা উপজেলার ৩ জন হলেন- আজিজনগর ইউনিয়নের ভিলেজার পাড়ার আব্বাস উদ্দিনের দুই ছেলে জসীম উদ্দিন (৩৩), তাওরাফ হোসেন বেলাল (১৮) ও একই ইউনিয়নের হিমছড়ি এলাকার আবুল হোছনের পুত্র মোহাম্মদ এনাম (৪৪)।
অন্যান্যরা হলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীর কালামিয়ার ছেলে মোহাম্মদ বাদশা (৩৮), চকরিয়ার উত্তর হারবাংয়ের মৃত আমির হোছেনের বৃদ্ধ পুত্র আবদুস সালাম (৭০), লোহাগাড়ার চুনতি মীরখিলের আবদুর রশিদের পুত্র সিরাজুল ইসলাম (৪০), বড়হাতিয়ার কুমিরাঘোনার আবদুল মাবুদের পুত্র মোহাম্মদ রুবেল (২০), লোহারদিঘীর জাফর আহমদের পুত্র জহির উদ্দিন (২৮), উত্তর কলাউজানের অজ্ঞাত আবদুর রশিদ (৫০), লেগুনা চালক (ড্রাইভার) চকরিয়ার মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র ফরহাদ উদ্দিন (১৮), হেলপার খুটাখালী গর্জনীয়া পাহাড় এলাকার নূর মোহাম্মদের পুত্র মোহাম্মদ সুমন (১৫), উত্তর হারবাং এলাকার মোস্তাফিজ খলিফার ছেলে জসিম উদ্দিন (২৩) ও উত্তর হারবাং এলাকার অজ্ঞাত লালু ফকির (৬২)।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের নবী হোছাইন (৪০) ও সাইফুল ইসলাম (৩০) মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দোহাজারী হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মো. ইয়াছির আরাফাত।
লোহাগাড়া উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিক মো. এরশাদ জানান, ভয়াবহ এই সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে একসঙ্গে ১৩ জনের প্রাণহানি হয়। তার মধ্যে লোহাগাড়ায় কর্মরত লামার আজিজনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাংবাদিক কাইছার হামিদের দুই ভাইও রয়েছেন।
এদিকে, রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় আজিজনগর বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে উত্তর হারবাং উলুমে দ্বীনিয়াহ মাদ্রাসা মাঠে আজিজনগরের নিহত তিনজনের জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
নিহত জসিম উদ্দিন ও তাওরাফ হোসেন বেলালের বড় ভাই সাংবাদিক কাইছার হামিদ বলেন, ছোট ভাই জসিম উদ্দিনের জন্য বউ দেখা হচ্ছিল। নতুন বাড়িতে আর নতুন বউকে তোলা হলনা। বৃদ্ধ বাবা মাকে কোন মতে বুঝানো যাচ্ছেনা।
আজিজনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন ইউনিয়নের ৩ জন নিহতের বিষয়ে তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের জানাযায় শোকাহত মানুষের ঢল নামে। নিহতের পরিবারকে শোক জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ