বাংলাধারা ডেস্ক
গত ১৪ বছরে দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা খুব শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করেন। এখন আর হাওয়া ভবনের পাওয়া দিতে হয় না। নিজেরা যাতে শান্তিতে ব্যবসা করতে পারেন, সেই পরিবেশ আমরা তৈরি করে দিচ্ছি।
রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ১২তলা বিশিষ্ট বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডার নিজস্ব প্রধান কার্যালয় উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে ১৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ তলা বিশিষ্ট বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডার নিজস্ব প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগারগাঁওয়ে স্থাপিত বিডার প্রধান কার্যালয় হিসেবে নবনির্মিত ভবনটির ‘বিনিয়োগ ভবন’ নামে নামকরণ করেছে সরকার।
সরকারের উন্নয়নের লক্ষ্য হলো তৃণমূলের মানুষ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। তাদের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। সেক্ষেত্রে নিজস্ব বাজার হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানে আমাদের দেশে যে আঞ্চলিক দেশগুলি তাদের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ স্থাপন করেছি।’
এক্ষেত্রে নেপাল-ভুটান ভারত, থাইল্যান্ডসহ মিয়ানমার থেকে শুরু করে সবার সঙ্গে চমৎকার একটা যোগাযোগ গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাউথ এশিয়াতে প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের বাজার। তাই এ সুবিধাটা যে কেউ নিতে পারেন। আমারা কক্সবাজারে এয়ারপোর্ট করে দিচ্ছি। ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেললাইন করা হচ্ছে। আমরা সড়কের উন্নতি করেছি। সেখানে ইস্ট-ওয়েস্টের মধ্যে একটা ব্রিজ হতে পারে বাংলাদেশ। সেইভাবেই আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলছি।’
‘কাজেই আমরা মনে করি আমাদের যে ভৌগোলিক অবস্থান সেটাও আমাদের অত্যন্ত অনুকূলে। মাতারবাড়িতে ডিপ সি-পোর্ট কার্যক্রম শুরু করেছে, পায়রা পোর্টের উন্নতি হচ্ছে, চট্টগ্রাম-মংলা পোর্টকে আমরা উন্নত করছি। আমরা বে-টার্মিনাল করে দিচ্ছি। আরও অনেক সুবিধা করে দিচ্ছি। সেভাবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘সবাই বিনিয়োগ করুন। এতে নিজেরাও লাভবান হবেন, আবার আমাদের দেশটাও লাভবান হবে। আমাদের রফতানি বাস্কেট বাড়াতে হবে। রফতানির জন্য আরও নতুন নতুন পণ্য বের করতে হবে। নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা।’
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে আমাদের দেশ আরও উন্নত হবে-আশাবাদ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ হবে। আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়েছি। তার ভিত্তিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে যাচ্ছি। এখানে থেমে থাকব না। ২১০০ সালের বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান সেটাও প্রণয়ন করেছি। কাজেই বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
যারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত, আপনারাও অত্যন্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করবেন। বাংলাদেশটাকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। শুধু সোনার বাংলাদেশই না ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ। অর্থ্যাৎ আমাদের জনগোষ্ঠী হবে স্মার্ট আমাদের অর্থনীতি হবে স্মার্ট, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য হবে স্মার্ট, সব আমরা ডিজিটাল সিস্টেমে করবো বলে অবহিত করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘হাইটেক পার্ক, ইনকিউবেশন সেন্টার করে দিচ্ছি, ট্রেনিং পাচ্ছে। এটাও একটা বিনিয়োগের বিরাট ক্ষেত্র। ডিজিটাল ডিভাইস তৈরি করে রফতানি করা। ডিজিটাল ট্রেনিং প্রাপ্ত দক্ষ জনশক্তি তারাও আমাদের দেশে বিরাট অবদান রাখতে পারে। কৃষি এবং ডিজিটাল সিস্টেম (আইসিটি) এ দুইটা ক্ষেত্র আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ । আমাদের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। অল্পতেই তারা শিখে নেয়। সেদিক থেকে আমাদের একটা বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। কাজেই সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বক্তব্য দেন।