আরাফাত কাদের »
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কাজ শেষ প্রায় ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশ। পদ্মা সেতু আর মেট্রোরেলের উদ্বোধনের পর অপেক্ষামান আরেকটি মেগা প্রকল্প এটি। আগামী মার্চিই শেষ হচ্ছে বাকি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ। এরপরই ওয়ান সিটি টু-টাউনের যুগে প্রবেশ করবে চট্টগ্রাম। ইতোমধ্যে টানেলে কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করবে এবং এর টোল কত হবে তাও নির্ধারণ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
কাজের অগ্রগতি সর্ম্পেক জানতে চাইলে টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ জানান, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের প্রায় ৯৫.৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
টানেলের ভেতরে ১২ ধরনের যানবাহনের জন্য টোল হার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। সেখানে দেখা যায়, প্রস্তাবিত টোল পার্শ্ববর্তী শাহ আমানত সেতু থেকে ৩ গুণ বৃদ্ধি রাখা হয়েছে। পিকআপ ভ্যানে শাহ আমানতে ১৩০ টাকার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু টানেলে টোল ধরা হয়েছে ২০০ টাকা, মাইক্রোবাসে ১০০ টাকার বিপরীতে ২৫০, মিনি বাসে ৫০ টাকার বিপরীতে ৩০০, বড় বাসে ১৫৫ টাকার বিপরীতে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ভারি যানবাহন ৫ টনি ট্রাকের জন্য ৪০০ টাকা, ৫-৮ টন ওজনের ট্রাকের জন্য ৫০০ টাকা, ৮-১১ টন পর্যন্ত ৬০০, ত্রি-এক্সেল ৮০০, ট্রেইলারের জন্য ১০০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তাজণিত কারণে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও ত্রি-হুইলার চালানোর কোনো সুযোগ রাখা হয়নি টানেলটিতে।
তবে এই মেগা প্রকল্পটির টোল হার সহনীয় পর্যায়ে রাখার দাবি করেন চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের টোল চূড়ান্ত নির্ধারণের আগে প্রস্তাবিত হার বিবেচনা করার কথা জানান বাংলাদেশ কার্ভাডভ্যান ট্রাক পণ্য পরিবহন মালিক এসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক আরিফুর রহমান রুবেল।
নগর পরিকল্পনাবিদ আশিক ইমরান জানান, শাহ আমানত সেতুর সাথে তুলনা করলে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোলটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আনোয়ারা প্রান্তে সংযোগ সড়কের কাজও পুরোপরি শেষ হয়নি, সেটি হতে আরও সময় লাগবে। টানেল অতিক্রম করে বর্তমানে যে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক আছে সেটি হয়ে যেতে হবে। যার ফলে টানেলের পরো সুফল পেতে আরও সময় লাগবে। এখনও যেহেতু সুযোগ আছে, তাই আমরা মনে করছি টানেলের টোল শাহ আমানত সেতুর সাথে সমন্বয় করা উচিত।
টানেলের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশে বলা হয়, টানেল চালু হওয়ার পর ২০২৫ সালে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫ টি যানবাহন চলাচল করবে। এবং ২০৬৭ সালে যানবাহনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রতিদিন গড়ে ১লাখ ৬২ হাজার।
