হাটহাজারী প্রতিনিধি »
চট্টগ্রামে হাটহাজারীতে শিক্ষক কর্তৃক ইয়াছিন ফরহাদ ( ৮) নামে এক ছাত্রের মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গের মাধ্যমে তথ্য পেয়েই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
সোমবার (৮ মার্চ) হাটহাজারী পৌরসদর ৫নং ওয়ার্ডের কামালপাড়ার মারকাজুল কোরান একাডেমিতে এই ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে মা পারভিন আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ জয়নাল মাদরাসায় তাদের সন্তানকে দেখতে যান। কিন্তু ফেরার সময় ইয়াছিন মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। এক পর্যায়ে সে মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাদরাসার হুজুর ইয়াহিয়া।
মাদ্রাসার মূল ফটকের বাইরে য়াওয়ায় শিশুটিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটান। আর এটি এলাকার কেউ একজন ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেন। আর এর পর পরই এই নির্মম নির্যাতনে প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
পরে বিষয়টি অবহিত হয়ে রাত ১টায় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে হাটহাজারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমীন ওই মাদ্রাসায় অভিযান চালায়। এ সময় মাদ্রাসা থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
এবিষয়ে ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, রাত ১২.৪৫ মিনিটে আমাকে ফেইসবুক মেসেঞ্জারে একজন ভাই ছাত্র প্রহারের বিষয়টা জানান। ইতিমধ্যে বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। আমি তাৎক্ষণিক হাটহাজারি থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে যাই। বাচ্চাটির সাথে কথা বলি এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করি। তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এমন সময় ছাত্রের বাবা মা এসে কান্নাকাটি করেন এবং শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান।
ইউএনও জানান, ছাত্রের বাবা-মা কিছুতেই মামলা করতে রাজি হচ্ছেন না। আমাদেরকেও আইনগত ব্যবস্থা না নিতে অনুরোধ করেন। তাদেরকে অনেক বুঝানো পরেও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনী ব্যবস্থা না নিতে। রাত ২ টা পর্যন্ত অভিভাবকেরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো আমি আইনী ব্যবস্থা না নিই।
ইউএনও রুহুল আমিন আরো বলেন,বুধবার সকালে ঐ শিশুর পরিবারের সাথে দেখা করে আবারো অভিযোগ দায়ের করার অনুরোধ করেছি। তারপরও তারা মামলা দায়ের করতে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি বলেন, শিশুটির শরীরের ব্যথা ওষুধে সারলেও মনের ক্ষত সারতে সময় লাগবে। তাকে খুশি করতে রাতে চকলেট দিয়েছি, সেও খুশি। গতকাল তার জন্মদিন ছিল জেনে আজ (১০ মার্চ) সকালে খেলনা নিয়ে গেলাম। শিশুটি তার ছোট ভাইয়ের জন্যও খেলনার আবদার করলে তাও দিলাম।
বাংলাধারা/এফএস/এআর