চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলি থানাধীন সাগরিকা স্ট্যাক ইয়ার্ড মাদকসেবীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সওজের সংগ্রহ ও সংরক্ষণ বিভাগের অধীন জায়গাটি নির্জন ও নিরবিলি হওয়ার সুযোগে মাদকসেবীরা সেখানে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক সেবন করে থাকেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগ রয়েছে, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই বিভিন্ন অপরাধী ও মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক বেচাকেনার পাশপাশি সেবন করেন এ স্ট্যাক ইয়ার্ডে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
পাহাড়তলির স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ ও কামাল হোসেন জানান, প্রতিদিন রাতে একশ্রেণির মাদকসেবীরা এখানে মাদকসেবন করে থাকেন। এতে এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।
জানা গেছে, সাগরিকা স্ট্যাক ইয়ার্ডের পরিবেশ অবনতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় পাহাড়তলী থানা পুলিশকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের সংগ্রহ ও সংরক্ষণ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ্র দাস।
চিঠিতে জানানো হয়, ফৌজদারহাট সাগরিকা স্ট্যাক ইয়ার্ডে সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল সংরক্ষিত রয়েছে। যেখানে বর্তমানে সওজের ৬ জন নিরাপত্তা প্রহরী কর্মরত রয়েছে। কিন্তু বিগত কয়েকদিন যাবত স্ট্যাক ইয়ার্ডে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বেড়েছে বিভিন্ন সময়ে বহিরাগতরা ইয়ার্ডের ভিতরে মাদকদ্রব্য সেবন ও ইয়ার্ডের মালামাল চুরির চেষ্টা করছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গত ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় বহিরাগতরা স্ট্যাক ইয়ার্ডের ভিতরে প্রবেশ করে মাদকসেবন ও মালামাল চুরির চেষ্টা করে। এতে নিরাপত্তা প্রহরীরা বাধা দিলে প্রহরীদের উপর সশস্ত্র হামলা করে মো. জহির উদ্দিন নামে একজন নিরাপত্তা প্রহরীকে গুরুতরভাবে আহত করেন। পরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় মাদকসেবীরা।
একই চিঠিতে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী স্ট্যাক ইয়ার্ডে কর্মরত নিরাপত্তা প্রহরীদের জানমাল এবং ইয়ার্ডে রক্ষিত সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল রক্ষায় পুলিশ সহযোগিতা ও পুলিশের টহল টিম বৃদ্ধির কথা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলি থানার ওসি মোহাম্মদ কেফায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘সড়ক ও জনপদ বিভাগ হতে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। আমাদের টহল ও মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কাজ করছেন। পাশাপাশি সাগরিকা স্ট্যাক ইয়ার্ডের আশেপাশে সন্ধ্যার পর থেকেই এখন পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। সরকারি সম্পদ রক্ষায় পুলিশ সব সময় আন্তরিক। পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করেছে।’
এছাড়াও জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের সংগ্রহ ও সংরক্ষণ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ্র দাস বলেন, সাগরিকায় সওজের স্ট্যাক ইয়ার্ডে সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল সুরক্ষায় পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা হলে এখানে মাদকসেবিরা ঘুরাফেরা করে ও বিভিন্ন মালামাল চুরি করছে বলে নিরাপত্তা প্রহরীরা আমাদের জানান। এখন পুলিশকে জানানোর পর অনেকটা কমে আসছে।’