ksrm-ads

২০ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

সন্দ্বীপে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় যুবকের মৃত্যু, দিনভর বিক্ষোভ

বাংলাধারা প্রতিবেদন  »

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ফসলি জমির উপর ট্রাক্টর চালিয়ে ফসল নষ্ট করে আসছিল একটি চক্র। এতে বাধা দেওয়ায় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত যুবকের নাম মো. শিহাব উদ্দিন মিশু (২২)। তিনি সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মো. শাহাবুদ্দিনের পুত্র।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মিশুকে পিটিয়ে আহত করে শামীম নামে স্থানীয় এক বখাটে। গুরুতর আহত অবস্থায় মিশুকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হলে রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত শিহাব উদ্দিন মিশু পেশায় একজন ট্রাক চালক। তার ৮ মাস বয়সের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। মিশুকে হারিয়ে তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

এদিকে মিশু হত্যার বিচার দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সন্দ্বীপ ট্রাক চালক সমিতির সদস্যরা। এসময় তারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জলদস্যু মোস্তফার ছেলে ঘাতক শামীমের নেতৃত্বে পুরো একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে ওই এলাকায়। স্থানীয় মগধরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম সমিরের ছত্রছায়ায় গত কয়েকমাস ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, নদীর পাড় থেকে মাটি কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিল এই গ্যাংটি।  

মিশুর পরিবার জানান, স্থানীয় মোস্তফা ও তার ছেলে শামীম মিশুদের ফসলি জমির উপর দিয়ে নিয়মিত মাটি বোঝাই গাড়ি চালিয়ে ফসল নষ্ট করতো। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালীদের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় মিশুদের পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েকবার নিষেধ করা হলেও মানতো না তারা। উল্টো মিশুদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হতো। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে মিশুদের জমির উপর দিয়ে মোস্তফা ও তার ছেলে শামীম ট্রাক্টর নেওয়ার সময় মিশু ও তার পিতা শাহাবুদ্দিন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফা ও শামীম তার লোকজন নিয়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় মিশুদের দোকানে এসে তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। মিশু জ্ঞান হারিয়ে অচেতন হয়ে গেলে শামীম ও তার লোকজন তাকে ফেলে রেখে যায়। পরে লোকজন জড়ো হয়ে মিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিশুর শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম পাঠায়।

অভিযোগ রয়েছে মোস্তফা ও শামীম ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ট্রাক ও ট্রলি ভরে নিয়মিত বিক্রি করে। তারা মাটি বোঝাই গাড়ি ফসলি জমির উপর দিয়ে নিয়মিত আনা নেওয়া করে এতে স্থানীয় মানুষের ফসলের ক্ষতি হয়। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাদের কেউ বাধা দিতেন না।

অন্যদিকে মগধরা ইউনিয়নের প্রায় সকল ওয়ার্ডে এ ধরনের কিশোর গ্যাং রয়েছে জানিয়ে এসবের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন। 

সন্দ্বীপ থানা পুলিশের ওসি বশির আহাম্মদ খান জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মূল আসামী শামিম এখনও পলাতক রয়েছে। নিহতের পিতা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে সন্দ্বীপ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। 

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন