সাইফুল ইসলাম, সন্দ্বীপ »
ছুটি কিংবা ব্যস্ততার পর ঘুরে বেড়াতে বহুদূরের এলাকা থেকে সন্দ্বীপের পশ্চিম দিকে জেগে উঠা মায়াবতী চরে সপ্তাহের বিভিন্ন সময় বেড়াতে আসেন পিতা-মাতা, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সহ অনেকেই।
বর্তমান সন্দ্বীপে ভ্রমন পিপাসু বা স্থানীয়দের একটাই আকর্ষণ এই মায়াবতী চর হলেও প্রতিনিয়ত বখাটেদের উপদ্রবে লাঞ্চিত হতে হয় এখানে বেড়াতে আসা সাধারণ মানুষদের। জোর চাপিয়ে বিভিন্ন দায় এনে অপদস্ত করছে বখাটেরা সদম্ভে। মাদকসেবি বখাটেরদের ভয়ে পরিবারে পরিজন ও প্রিয়জনকে নিয়ে বেড়াতে আসা মানুষজন স্থানীয় কোন রেস্টুরেন্টেও বসেনা।
গত বারোই জুন বিকেলে সন্দ্বীপ শহর কমপ্লেক্সের উত্তর আবাসিক এলাকায় বসবাসরত এক স্কুল শিক্ষার্থীকে হঠাৎ এক ঘন্টা আটকে রেখে নানারকম বিব্রতকর প্রশ্ন করতে দেখা যায় বখাটেদের। এক পর্যায়ে তার উপর জোর পূর্বক মিথ্যে দায় চাপিয়ে দেয়! বখাটেদের দাবি একটা ছেলের সাথে অপৃতিকর অবস্থায় ছবি তোলার কারণে তাকে আটকে রাখা হয়েছে!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেয়েটির সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বজনদের সাথে ঘুরতে এসে সবাই একসাথে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলো হঠাৎ মোটরসাইকেল চেপে উপস্থিত হয় বখাটের দল। ছবি তোলাকে কেন্দ্রকরে তাকে লাঞ্চিত করে এবং দীর্ঘক্ষণের জন্যে আটকে রাখে। সব চেয়ে বড় বিষয় এমন জনবহুল স্থানে আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তোলা কিভাবে সম্ভব এবং যেখানে নিজ পরিবারের লোকজনও সাথে থাকে!
একপর্যায়ে মানুষের জটলা বেধে যায় এবং পরর্বতীতে সেখানকার স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা এস এম সোহেলের সাহায্যে মেয়েটি ও তার স্বজনদের বখাটের হাত থেকে নিরাপদে বাড়ি পৌছে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সেখানকার স্থানীয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদূর রহমান জানায় ঘুরতে আসা অধিকাংশই সন্দ্বীপের বাসিন্দা এবং এদের পূর্ন অধিকার থাকলেও এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ানোটা রীতিমতো ভয়াবহ বিপদ আর বখাটেরা সঙ্গী হিসেবে কোন মেয়ে দেখলেই যেন তাদের আয় উন্নয়নের খোরাক দেখতে পায়।
ঘুরতে বা বেড়াতে আসা পর্যটকদের ফোন, মানিব্যাগ, ঘড়ি সহ বিভিন্ন দামী জিনিস হস্তগত করাই যেন এদের মুল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় যা যেকোন মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর অবৈধ অনৈতিক হস্তক্ষেপ। এতে করে জনজীবন যেমন বিপন্ন হচ্ছে তেমনি এই সুন্দর স্থানটির মর্যাদা ও আকর্ষণ হারাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান উপদ্রবকারী বখাটেরা সকলেই মাদকসেবি ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়েওঠা সঙ্গবদ্ধ চক্র। স্থানীয়দের দাবি উপরমহলের লোকজন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই চরটির নির্মল ও হয়রানিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে, নতুবা এটিই একসময় এই বখাটেদের আস্তানা হিসেবে এবং সন্দ্বীপের ত্রাসভূমি রূপে আবির্ভূত হবে।
স্থানীয় রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, পূর্বেও ইভটিজিংসহ দর্শনার্থীদের নানা হয়রানির অভিযোগ এসেছে এবং স্থানীয়ভাবে অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। আমরা স্থানীয়ভাবে সজাগ দৃষ্টি রাখছি এবং ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো আমরা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেব।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর