দেশের চিকিৎসকদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহারের বৈধতা নিয়ে করা রিটের রায় আজ (১২ মার্চ) ঘোষণা করা হবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে টানা তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলনে নেমেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক)সহ দেশের মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, দীর্ঘ আন্দোলন সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। শুধুমাত্র আশ্বাসের রাজনীতি চলছে, বাস্তব কোনো সমাধান হয়নি।
রায় বিপক্ষে গেলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যদি আদালতের রায় তাদের বিপক্ষে যায়, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি নেবেন, যা দেশের হাসপাতালগুলোর সেবা ব্যবস্থায় বড় সংকট তৈরি করতে পারে।
চমেক শিক্ষার্থী ফারহান হোসেন বলেন, “আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে আন্দোলন করছি, তবুও দাবি মানা হয়নি। চিকিৎসকদের পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের কথা না শোনা হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাব।”
এক ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, “শুধু আশ্বাস দিয়ে আমাদের দাবিগুলো উপেক্ষা করা হচ্ছে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই, যাতে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে না হয়।”
জরুরি বিভাগ চালু, অন্যান্য সেবা বন্ধ
চিকিৎসকদের আন্দোলনের ফলে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ইনডোর ও আউটডোর সেবা বন্ধ রয়েছে। বৈকালিক সেবাও বন্ধ থাকবে। তবে চমেক হাসপাতালের আইসিইউ, সিসিইউ, ক্যাজুয়ালটি বিভাগ, এডমিশন ইউনিট এবং লেবার ওয়ার্ড চালু রয়েছে, যাতে সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত না হয়।
কেন এই আন্দোলন?
২০১৩ সালে কিছু সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহারের অনুমতির জন্য আদালতে রিট দায়ের করেন। দীর্ঘ আইনি জটিলতার পর ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে। এরপর থেকেই টানা আন্দোলনে রয়েছেন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি-
- জনসাধারণকে অপচিকিৎসার হাত থেকে রক্ষা করা।
- স্বাস্থ্যখাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
- চিকিৎসা পেশার মর্যাদা রক্ষা করা।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা
এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিএমডিসি বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আন্দোলন আরও বেগবান হলে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এআরই/বাংলাধারা