বাংলাধারা ডেস্ক »
সন্ত্রাসীরা কোপাচ্ছিল। আর সেই খুনিদের দুই হাতে জাপটে ধরে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন স্ত্রী। চিৎকার করে অন্যদের সাহায্য চাচ্ছিলেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি আয়েশা আক্তার মিন্নি। সেই ভয়াল স্মৃতির বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার সামনেই সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি শত চেষ্টা করেও তাকে রক্ষা করতে পারিনি। হামলার সময় কোনো লোক এগিয়ে আসেনি।’ বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনের কাছে বাবার বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
আয়েশা আক্তার মিন্নি বলেন, ‘সকাল ৯টার দিকে স্বামী রিফাত শরীফের সঙ্গে বরগুনা কলেজে আসি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেই আমরা। এসময় বরগুনার কলেজ সড়কের ক্যালিক্স কিন্ডার গার্টেনের সামনে বেশ কয়েকজন যুবক আমাদের গতিরোধ করে। সেই সঙ্গে রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করে তারা। এর মধ্যেই চাপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী।’
তিনি আরো বলেন, ‘এরপরই রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী। আমি তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই তাদের থামাতে পারিনি।’ ভিডিওতে যাদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মূলত তারাই প্রথমে রিফাত শরীফ ও তার পথ আটকে দিয়েছিল বলে জানান আয়েশা আক্তার মিন্নি।
আয়েশা আক্তার মিন্নি বলেন, ‘নয়ন আমাকে নানাভাবে বিরক্ত করতে থাকে। কলেজে গেলে আমার রিকশার উপর উঠে বসে। আমাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। কথা বলার জন্য হুমকি দিতে থাকে। ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পরে বিষয়টি পরিবারকে জানালে তারা আমাকে রিফাতের সঙ্গে বিয়ে দেয়। ভালোভাবেই ছিলাম আমরা। কিন্তু নয়ন এই ঘটনা ঘটালো।’
এসময় কাঁদতে কাঁদতে মিন্নি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচারের দাবি করছি। প্রধানমন্ত্রী নারী আমিও নারী আশা করি তিনি এর বিচার করবেন।’ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে আহত করে একদল যুবক। তাকে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম/বি