চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে রয়েছে ২১টি বাঁক। এক্সপ্রেসওয়ের ১৬ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে অতিরিক্ত এই বাঁক। বাঁকের কারণে ঘটছে যতো বিপত্তি ও দুর্ঘটনা। অপরিকল্পিত এ বাঁকের মধ্যে বারিক বিল্ডিং, কাস্টমস, সল্টগোলা ও কাঠগর এই চারটি বাঁকই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বাকেঁ চালকদের গতিসীমা না মানার মানসিকতা এবং বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। সবশেষ গত শুক্রবার মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে দুই যুবকের।
জানা গেছে, এই এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। গত বছরের ১৪ নভেম্বর এ উড়াল সড়কটির (১৬ কিলোমিটার) মূল অংশের উদ্বোধন করা হয়েছিল। তখন গাড়ি চলাচল শুরু হয়নি। এরপর গত আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ কিলোমিটার; তবে আঁকাবাঁকা অংশে ৪০ কিলোমিটার।
নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করা ও অপ্রয়োজনীয় বাঁকের কারণে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে ওঠেছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি তার নিজস্ব ডিজাইনের নয়। কারণ যে স্পিড ব্রেকার ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো এমন ধরনের যে, একটি গাড়ি স্লো করলে পেছনের গাড়ি এসে তাকে মেরে দিচ্ছে। আঁকাবাঁকা হওয়ার কারণে সড়কের কোনো কোনো জায়গা দেখতে সমস্যা হয়। সামনে ব্যারিয়ার দেখা যাচ্ছে, কিন্তু রাস্তা নয়।’
তবে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বা বিপজ্জনক বাঁক নেই। ফলে দুর্ঘটনা ঘটারও কোনো আশঙ্কা নেই। নিচের রাস্তার প্যারালালে ফ্লাইওভারটি করা। নিচের রাস্তাতে যেমন বাঁক আছে, উপরের রাস্তাতেও তেমন আছে। একটা সড়কে বাঁক রাখা হচ্ছে স্বাভাবিক নিয়ম। গাড়ি চালকদের সচেতনতা বাড়ানোর জন্যও বাঁক রাখা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেকের সঙ্গে আলাপ করে এটা করেছি। বাঁকের কারণে যে স্পিড লিমিট দেয়া আছে ৬০ কিলোমিটার, এ নিয়ম মেনে যদি কেউ গাড়ি চালায়, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটার প্রশ্নই থাকে না। নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে।’
এদিকে, দুর্ঘটনাপ্রতিরোধে স্পিড মনিটরিং ক্যামেরা ওণ সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানাল সিডিএ। আর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় টোলের হার চূড়ান্ত করলে আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচলের জন্য এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। অতিরিক্ত বাঁক ও অত্যধিক গতিতে চালানোর মানসিকতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন চালকরাও।
মো. হারুন নামে এক সিএনজি চালক জানান, বাঁক থাকার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি। বাঁকগুলোর মধ্যে যদি নির্ধারিত গতি অনুসারে গাড়ি চালানো না হয়, তাহলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে।
সূত্র: সময়টিভি