ksrm-ads

১৮ জানুয়ারি ২০২৫

ksrm-ads

২০ জনের বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আটক

বাংলাধারা ডেস্ক » 

নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে পাঁচ বছর ধরে ব্ল্যাকমেইল করে ২০ জনের বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে আরিফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষককে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বৃহস্পতিবার (২৭জুন) সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড হাইস্কুল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ ও র‌্যাব।

এলাকাবাসীর বারত দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন শাহ পারভেজ জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম গত আট বছর ধরে স্কুলটিতে গণিত ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করাতেন। এর মধ্যে বিগত পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন সময় আরিফুল ইসলাম অসংখ্য ছাত্রীকে ব্লাকমেইল  করে আপত্তিকর ছবি তুলে ধর্ষণ করতেন।

ওসি জানান, ছাত্রীদের কোচিং পড়ানোর জন্য তার বাসা ছাড়াও স্কুলের পাশে বুকস গার্ডেন নামক একটি এপ্যার্টমেন্টে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন ওই শিক্ষক। তার স্ত্রী, সন্তান না থাকলেও ওই ফ্ল্যাটে তিনটি খাট ছিল বলে জানায় ফ্ল্যাটটির দারোয়ান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, গত তিনদিন যাবত তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো এলাকায় প্রচার হতে থাকে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই স্কুলে গেলে আরিফুল ইসলাম তার মোবাইলে থাকা আপত্তিকর ছবিগুলো মুছে ফেলে। পরবর্তীতে এলাকাবাসী ওই মোবাইল উদ্ধার করে এলাকার একটি মোবাইলের দোকানে নিয়ে গিয়ে সফটওয়ারের মাধ্যমে ছবিগুলো উদ্ধার করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই স্কুলে হামলা চালায়। এ সময় স্কুলের ওই শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে গণধোলাই দেওয়া হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার আরিফুল ইসলামকে সহযোগিতা করে আসছিলে বলেন অভিভাবকদের অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, তার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় ওই শিক্ষকের দ্বারা যৌন লালসার স্বীকার হয়।

ওই অভিভাবক আরও বলেন, ‘তার মেয়ে এখন নবম শ্রেণিতে পড়ে। এখনও ওই শিক্ষক থেকে পরিত্রাণ পায়নি আমার সন্তান। কিন্তু ঘটনার এত বছর পেরিয়ে গেলেও সন্তান আমাকে না বলায় আমি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। গত দুই-তিনদিন পূর্বে এ ব্যাপারটি জানতে পেরে এলাকার কিছু যুবকদের বলেছি।’

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে একই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে কিন্ডারগার্ডেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন রফিকুল ইসলাম জুলুফিকার। পরবর্তীতে ওই স্কুলের লাভের টাকা দিয়ে বর্তমান স্কুলের জমিসহ চারতলা ভবনটি কিনে নেন প্রধান শিক্ষক। আট বছর আগে এ স্কুলে গণিত ও ইংরেজির শিক্ষক হয়ে আসেন আরিফুল ইসলাম।

এলাকাবাসী আরও জানায়, আরিফুলের অপরাধগুলোতে সহযোগিতা করত স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার। গত তিনমাস আগে স্কুলের এক শিক্ষিকার সঙ্গেও ওই শিক্ষক যৌনহয়রানি করেছেন।

ওই শিক্ষিকা এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিলে প্রধান শিক্ষক তাকে থানা থেকে ছড়িয়ে আনেন বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক।    

এ বিষয়ে র‌্যাব-১১ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন (পিপিএম) বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে তার মোবাইল থেকে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনেক ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করেছি। তার মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। ২০ জনের বেশি ছাত্রীকে ওই শিক্ষক ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণ করে। যা প্রাথমিকভাবে ওই শিক্ষক আমাদের কছে শিকার করেছে।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর

আরও পড়ুন