চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০০৩ সালে মিথ্যা ঘোষণায় সুপার গ্লু আমদানিতে প্রায় দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় দুই আমদানিকারকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মঙ্গলবার দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন বাদী হয়ে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। এ হিসাবে প্রায় ২১ বছর পর মামলা করা হলো।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০০৩ সালের এক অভিযোগ অনুসন্ধানে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক ফাঁকির সত্যতা পায় দুদক। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সততা ইন্টারন্যাশনাল এবং অনামিকা ট্রেডার্স ইউসিবিএল ব্যাংকের দুই শাখায় ঋণপত্র খুলে ১৭টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে আমদানি করা সুপার গ্লু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস করে। মূলত পণ্যের এইচএস কোড অনুযায়ী আমদানিকৃত সুপার গ্লুর মূল্য সঠিক থাকায় কাস্টমস কর্মকর্তারা পণ্যের শুল্কায়ন করেন।আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংকের মূল কাগজপত্র জালিয়াতি করে পণ্যের মূল্য কম দেখিয়ে মিথ্যা নথি তৈরি করে শুল্কায়নের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে জমা দিয়ে শুল্কায়ন করে। এতে জালিয়াতির মাধ্যমে আমদানি মূল্যের চেয়ে কম দেখিয়ে পণ্য খালাস নিয়ে তারা এক কোটি ৭২ লাখ ৯২ হাজার ৯২৪ টাকার শুল্ক ফাঁকি দেন।
মামলার আসামিরা হলেন- চাঁদপুরের মতলব থানার আমুয়াকান্দা গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন পাটোয়ারীর ছেলে মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম (৬০) এবং গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার সুলতানশাহী গ্রামের শেখ নুরুল ইসলামের ছেলে শেখ ফারুক আহমেদ ওরফে শাহরিয়ার (৪৯)। এর মধ্যে আমিরুল ঢাকায় সততা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। অপরজন শাহরিয়ার চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি খাতুনগঞ্জের অনামিকা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী।
তাদের বিরুদ্ধে মামলায় সুপার গ্লু আমদানিতে জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্যের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে আমদানি মূল্য কম দেখিয়ে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে দণ্ডবিধির ১০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৪০৯ ধারায় অভিযোগ করা হয়।
দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সুপার গ্লু আমদানিতে প্রায় দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় দুই আমদানিকারকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।