ksrm-ads

৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ksrm-ads

২২মাস পর জামিনে কারামুক্ত বিএনপি নেতা কায়েছ, এলাকাবাসীর গণসংবর্ধনা

২২ মাস পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর বিএনপি নেতা মোহাম্মদ কায়েছকে গণসংবর্ধনা দিয়েছে পটিয়া উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম পটিয়া কক্সবাজার মহাসড়কের ক্রসিং মোড় থেকে কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা তাঁর এলাকা পর্যন্ত হাজারো জনতা তাকে গাড়ি বহরে করে এগিয়ে নিয়ে আসে। এরপর বুধপুরা এলাকায় বিএনপি নেতা মোহাম্মদ কায়েছের বাড়িতে বিশাল গণসংবর্ধনা দেয়া হয়।

এসময় এলাকাবাসীর গণসংবর্ধনার জবাবে বিএনপি নেতা কায়েছ বলেন, কাশিয়াইশ ইউনিয়ন একটি অসাম্প্রদায়িক এলাকা। যেখানে সব ধর্মের মানুষের বসবাস। সেই কাশিয়াইশ ইউনিয়নকে যুগ যুগ ধরে একজন ব্যক্তি বার বার কলঙ্কিত করেছেন। এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষের ওপর চালানো হতো হামলা মামলা জবর-দখল। এখন সময় এসেছে তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার।

তিনি আরও বলেন, গেল ইউপি নির্বাচনে আমার বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে সেই বিতর্কিত কাসেম চেয়ারম্যান তার ক্ষমতার লালসার মেতে উঠেছিল। এলাকায় মাদক, জুয়া, গরু চুরিসহ নানা ভয়াবহ অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়।

এসময় আও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা সামশুল আনোয়ার খান, সমাজ সেবক জসীমুল আনোয়ার খান, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মীর জাকের আহমেদ, আবদুল করিম, মোহাম্মদ আলী মেম্বার, আজগর আলী, সেন্টু বড়ুয়াসহ আরও অনেকেই।

জানা যায়, ইউপি নির্বাচনের জের ধরে ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল রাতে পটিয়া উপজেলা কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা বাজার এলাকায় মোহাম্মদ সোহেলকে (৩৮) ছুরিকাঘাতে খুন করে মোহাম্মদ শরিফ। এ ঘটনায় ২৩ এপ্রিল এলাকার বিতর্কিত সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম (বর্তমানে বিএনপির মামলায় কারাগারে আছে) বাদী হয়ে ইউপি নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা মোহাম্মদ কায়েছকে প্রধান এবং মোহাম্মদ শরীফ, মোহাম্মদ মনছুর, মোহাম্মদ সুমন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, জসিমুল আনোয়ার খাঁন, মোহাম্মদ আজগর, কায়সার উদ্দিন জনিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার একদিন পর হামলার ছুরিকাঘাতকারী মোহাম্মদ শরীফকে আটক করে পুলিশ। সেসময় শরীফ রিমান্ডে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এতে শরীফ নিজে একাই ছুরিকাঘাত করে সোহেলকে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। কিন্তু তৎকালীন পটিয়া থানা পুলিশের ওসি রেজাউল করিম, এস আই সঞ্জয় কুমার ঘোষ, হাবিব ও পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমানের যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর বিএনপি নেতা কায়েছ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসার পথেই সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ, ২২ মাস পর তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।

পরে সে মামলা হতে সমাজ সেবক জসীমুল আনোয়ার খান, মোহাম্মদ আজগরকে খালাস দেওয়া হয়। অন্য আসামীরা জামিন আছেন। মামলার ২ নং আসামি মোহাম্মদ শরীফ দুই বছর ধরে কারাগারে আছেন।

এদিকে, পটিয়ায় বির্তর্কিত কাশিয়াইশ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জনরোষের শিকারে পড়ে কোন রকম প্রাণে বেঁচে গেলেও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। গত ১৮ আগষ্ট উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের বির্তকিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সকালে পরিষদে যাওয়ার পর হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এসময় খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে পটিয়া থানায় নিয়ে আসে। সেদিন পরিষদ থেকে সেনাবাহিনীর টিম তাকে উদ্ধার করে আনার সময় ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেন হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা বিভিন্ন গাড়িতে করে মিছিল সহকারে থানায় এসে জড়ো হয়। সারাদিন পর্যন্ত হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা থানার গেইটের রাইরে অবস্থান করেন। তাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা। সেদিন তার বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে থানায়।

১৯ আগস্ট কাসেম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বুধপুরা গ্রামের ভুক্তভোগী নুর আয়শা বাদী হয়ে একটি চাঁদাবাজি মামলা এবং পটিয়া মাদ্রাসা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র নুরুল হাসান বাদী হয়ে আরো একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করার পর আদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর কাসেম চেয়ারম্যান আত্নগোপনে ছিলেন। ১৮ জুলাই চেয়ারম্যানের চেয়ার দখলে নিতে পরিষদে আসলে জনরোষের শিকারে পরিনত হন। তার বিরুদ্ধে বাড়িঘর, জমি দখলসহ এলাকায় বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন