রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি »
পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে গুলি করে হত্যা করে আইয়ুব বাহিনীর প্রধান আইয়ুবকে। এতেও রেহাই মেলেনি, অবশেষে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে আইয়ুব হত্যার আসামি মোহাম্মদ হাছান (৩৬)।
রোববার (৮ এপ্রিল) সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ। এর আগে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে গ্রেফতার করে র্যাব-৭। আইয়ুবের স্ত্রী বাদি হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ সাড়ে তিন মাস তদন্ত শেষেও এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় আদালত মামলাটির তদন্ত পিবিআইকে করার আদেশ দেন।
জানা যায়, ১৯৮৭ সালে রাঙ্গুনিয়ায় আব্দুস সাত্তার তালুকদারকে দিনদুপুরে জবাই করে হত্যা করেন আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব। পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে ৩২ বছর ধরে চেষ্টা করে আসছিলেন নিহত আব্দুস সাত্তার তালুকদারের দুই ছেলে মহসিন এবং হাছান। ২০১৯ সালে এসে ভাড়াটে খুনি দিয়ে গুলি করে খুন করান পিতার হত্যাকারী আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে।
এর আগে ২০২০ সালে আইয়ুব হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করলে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। গ্রেফতার পাঁচজন হলো- আব্দুল আজিজ প্রকাশ মানিক (২৪), মো. আজিম (২৪), আব্দুল জলিল (২৯), মো. রুবেল (২৮) ও মো. মহিন উদ্দিন (২৭)।
তারা জানান, মহসিন এবং হাছান নামে দুইজন তাদেরকে ভাড়া করেছিলেন আইয়ুবকে হত্যা করার জন্য। সেসময় ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা পরিচালিত অভিযানে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙ্গামাটির রাজস্থলী’র বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলার টিম।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিলকী জানান, আইয়ুব হত্যার আসামি হাছানকে র্যাব গ্রেফতার করে রাতে থানায় হস্তান্তর করে। আজ রোববার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুরের বিরুদ্ধেও এক ডজনের উপর হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে ১৯৮৫ সালে সাবেক মেজর ওয়াদুদকে হত্যা, ১৯৮৬ সালে মেহেরুজ্জামানকে হত্যা, ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানকে হত্যা, একই সালে গফুরকে হত্যা, ১৯৯২ সালে নুরুল ইসলাম হত্যা। ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান হত্যাকান্ডে আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সময় আব্দুস সোবহানের দুই ছেলে কবির ও সবুরকে পথে আটক করে খেঁজুর কাঁটা দিয়ে তাদের চোখ উপড়ে ফেলেন আইয়ুব।