চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে অপ্রয়োজনীয় ও জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় ৫৮৭ কোটি টাকা অপচয়ের শঙ্কায় একটি প্রকল্প বাতিল চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আবেদন জানিয়েছেন।
কর্ণফুলী উপজেলাবাসীর পক্ষে এ স্মারকলিপি দেন
কর্ণফুলী উপজেলা শাখা বিএনপি’র লিগ্যাল এইড কমিটির আহ্বায়ক আ্যাডভোকেট এস.এম. ফোরকান ও সদ্য সচিব আ্যাডভোকেট মো. গোলাম মোর্শেদ।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে সংগঠনটির নেতারা
রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় রোধ একনেকে পাস হওয়া “চাতরী (চৌমুহনী) সিইউএফএল-কর্ণফুলী ড্রাইডক (মেরিন একাডেমি) ফকিরনীরহাট (এন ১২৯) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ স্থান-মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ” নামক সড়ক প্রকল্পটি বাতিল চেয়েছেন।
এ স্মারকলিপি প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন আ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ওসমান , আ্যাডভোকেট জাহেদুল ইসলাম , আ্যাডভোকেট এয়াকুব ,অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন ।
এতে কর্ণফুলী এলাকাবাসীর পক্ষে লিগ্যাল এইড কমিটির নেতারা জানান, কর্ণফুলী নদীতে সদ্য নির্মিত কর্ণফুলী টানেলের পূর্বতীরে জনগণের প্রয়োজন না হওয়া সত্ত্বেও জনমত যাচাই ব্যতিত কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলাধীন “চাতরী
(চৌমুহনী) সিইউএফএল- কর্ণফুলী ড্রাইডক (মেরিন একাডেমি) ফকিরনীরহাট প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
তথ্যমতে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটতে (একনেক) এ প্রকল্পের বাজেট বরাদ্দ করা হয় ৫৮৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতাভুক্ত কর্ণফুলী থানাধীন মেরিন একাডেমী সড়ক কয়েকটি ইউনিয়ন এর উপরে অতিক্রম করে শিকলবাহা চৌমুহনীতে চট্টগ্রাম পিএবি সড়কের সহিত সংযুক্ত হয়।
প্রস্তাবিত সড়কের দুই পাশে বৈরাগ, বদলপুরা, দক্ষিণ শাহমীরপুর, জুলধা, শাহমীরপুর, শিকলবাহা
ইউনিয়নের এলাকায় অসংখ্য ডেইরী ফার্ম ও হাজার হাজার লোকের বসতবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাজার, কবরস্থান, স্কুল, বাজার ইত্যাদি বিদ্যমান রয়েছে। দুঃখের বিষয় ভৌগলিক অবস্থানও স্থানীয়ভাবে যাচাই বাছাই না করে ও জনস্বার্থ বিবেচনা না করে ও এলাকার জনগণের মতামত উপেক্ষা করে সাবেক সরকারের ভূমিমন্ত্রী ও একজন সচিবের অনৈতিক মনোবাসনা পূরণে গত বছর তড়িগড়ি করে সড়ক প্রকল্পটি প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও গ্রহণ করা হয়।
জানা যায়, প্রকৃতপক্ষে উন্নয়নের নামে সরকারী অর্থের লুন্ঠন কার্য্য বাস্তবায়ন করার জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। উচ্চ বিলাসী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হল প্রায় ২০ হাজার লোক বসতবাড়ী হতে
উচ্ছেদ হবে ও এলাকার অসংখ্য ডেইরী ফার্ম, বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার, কবরস্থান ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এমনকি উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে রাষ্ট্রের ৫৮৭ কোটি টাকা অপচয় করা হবে বলে ধারণা করছি।
যদিও বর্তমানে বিদ্যমান সড়কসমূহ কর্ণফুলী টানেলের গাড়ী চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত সক্ষম আছে নতুন করে রাস্তা প্রশস্থকরণের কোন প্রয়োজন নাই। জনশ্রুতি রয়েছে যে, একটি ড্রাইডক কোম্পানীকে ট্রান্সপোর্ট সুবিধা দেওয়ার জন্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও এক সচিবের অনৈতিক অভিলাস পূরণ কল্পে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
অতি উৎসাহিত হয়ে সরকারের ৫৮৭ কোটি টাকা জলে ফেলে দেওয়ার সামিল হবে। কেনোনা, কর্ণফুলীর পূর্বতীরে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার অধীন টানেল অভিমূখে ৪ ও ৬ লেনের
এতগুলো সড়ক থাকার পরও সড়ক প্রশ্বস্তকরণের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য বাড়ীঘরের ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা শাখা বিএনপি’র লিগ্যাল এইড কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট এস.এম. ফোরকান ও সদস্য সচিব এডভোকেট মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের ৫৮৭ কোটি টাকা অপচয় রোধকল্পে উক্ত প্রকল্পটি বাতিল করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক আশ্বাস দিয়েছেন যথাযথ বিবেচনাপূর্বক বিষয়টি একনেকে জানাবেন।’