তারেক মাহমুদ »
অতিকায় ক্ষুদ্র করোনায় কাঁপছে দুনিয়া, বাড়ছে উদ্বেগ। বিশ্বে আক্রান্ত ১৮৬ দেশের সাথে করোনার উপসর্গ মিলেছে বাংলাদেশেও। করোনা ভাইরাস উদ্বেগে প্রতিদিন ঝিমিয়ে পড়ছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। যানজটপ্রবন ব্যস্ত সড়ক কোলাহলমুক্ত ফাঁকা। যাত্রী সংকটে ভুগছে সড়কে বেড়িয়ে আসা হাতেগোনা কয়েকটি গণপরিবহণ। অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে আসছে না কেউই। বিনোদন পার্ক আর পর্যটন এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। সবমিলয়ে সুনসান নিরব-নিস্তব্দ যেন অজানা আতঙ্কে কাঁপছে চারিদিক। তবে আপাতদৃষ্টিতে নগরীকে ফাঁকা মনে হলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে ব্যস্ত নগরবাসীর উপচে পড়া ভীড় দেখা গিয়েছে নগরীর পাইকারি বাজারগুলোতে।
সোমবার (২৩ মার্চ) নগরীর রিয়াজউদ্দীন বাজার, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলী বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় জনশূন্য চারপাশ। ভিড় নেই চট্টগ্রাম রেল স্টেশনেও। কদমতলি বাসস্ট্যান্ড, সিনেমা প্যালেস, অলংকার মোড়, নারিকেল তলাসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডগুলোও ফাঁকা। সড়কে ঢিমেতালে দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক। ব্যবহার হচ্ছে না সিগন্যাল বাতিও। হাতের ইশারায় গাড়ি চলছে আর থামছে। চৌমুহনীতে মাইক লাগিয়ে করোনা ভাইরাসে করণীয় সম্পর্কে সচেতনতামূলক তথ্য প্রচার করছে। সামর্থ্য অনুযায়ী চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োযনীয় পণ্য ক্রয়ে ব্যস্ত নগরবাসী।

ক্রেতা তানভীর আহমেদ রানা বাংলাধারাকে জানান, দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। তাই দোকানে এসেছি মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড গ্লাবস কিনতে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আতঙ্কিত নগরবাসীদের ভীড় হঠাৎ করেই পাইকারি দোকানগুলোতে বেড়ে গেছে। যদিও উপচে পড়া ভীড় এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যের পক্ষে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তবে নগরীর বাইরে বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের দোকানিরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য স্ব স্ব এলাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যে পাইকারি দরে কিনতে এখানে ভীড় জমিয়েছেন।

মেট্রোপ্রভাতী বাস মালিক সমিতির অন্যতম সদস্য কিবরিয়া বাংলাধারাকে জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে টিকিটবাহী এই পরিবহনের ব্যবসা মন্দা। শুধু অফিস, গামেন্ট শুরু এবং ছুটি হলে কিছু যাত্রী হয়। এছাড়া সারাদিন যে যাত্রী হয় তাতে ইনকাম তো দূরের কথা জ্বালানি তেলের খরচও উঠছে না।
বারিক বিল্ডিং থেকে চকবাজারগামী হিউম্যান হলার চালক আরিফ বাংলাধারাকে জানান, কলেজ বন্ধ থাকায় আগের মতো তেমন যাত্রী হয় না। রোড খরচ মালিকজমা তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কমে গেছে রাইড শেয়ারিংও।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আজ নতুন করে আরও ছয়জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ফলে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ জনে। আর দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২০ জন। আর কোয়ারেন্টিনে রয়েছে অন্তত ১৪ হাজার।
প্রসঙ্গত, চীনের উহান শহর থেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। বিশ্বের ১৬২ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি এ ভাইরাস। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৮ জন। প্রতিক্ষণে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













