মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক»
ভ্যালু এ্যাডেড ট্যাক্স(ভ্যাট) নিবন্ধনে ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অসহযোগীতার কারণে ভ্যাট কর্মকর্তা-কর্মচাররীরা মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ব্যবসায়ীদের সচেতন করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে বিভিন্ন মার্কেট বা শপিংমলে ভ্যাট নিবন্ধন বুথ বসিয়ে ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা করার প্রাণপন চেষ্টা চালানো হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এমনই একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বুধবার। নগরীর খুলশী থানাধীন কনকর্ড টাউন সেন্টারে দু’দিন ব্যাপী ভ্যাট নিবন্ধনের বুথ খোলা হয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভ্যাট কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের ভ্যাট নিবন্ধন করে দিবেন অনলাইনে। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট পাহাড়তলী সার্কেলের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের এ ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বুধবার দুপুরে এ বুথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলার কাস্টমস এক্সসাইজের ডেপুটি কমিশনার অব কাস্টমস সৈয়দ আহম্মদ রুবেল। ফিতা কেটে তিনি ভ্যাট নিবন্ধন বুথের শুভ সূচনা করেন। এসময় এই শপিং মলের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ জালাল আহম্মেদ রুম্মন, যুগ্ন সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
কনকর্ড টাউন সেন্টারে ভ্যাট বুথ খোলা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলার কাস্টমস এক্সসাইজের ডেপুটি কমিশনার অব কাস্টমস সৈয়দ আহম্মদ রুবেল বলেন, সারাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৭ শতাংশ ব্যবসায়ী ভ্যাট নিবন্ধন করেছেন। আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ ব্যবসায়ী ভ্যাট নিবন্ধনেরে আওতায় আসবে। তবে আমাদের জনবল প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ছিল কিন্তু জনবল বর্তমানে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। তথা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। তবে শতভাগ জনবল কার্যকর করা হলে শতভাগ ব্যবসায়ীকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না।

ভ্যাট নিবন্ধন কঠিন কোন বিষয় নয়। কারণ বুথে কর্মরত কর্মকর্তাগন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দেশকে সল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে ও শতভাগ ব্যবসায়ীদের ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনকে বদ্ধ পরিকর। ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করতে ইএফডি’তে ভ্যাট দিলে বিনে পয়সায় লটারির কুপন দিচ্ছেন। প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ১০১টি পুরষ্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর)। অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করতে ব্যবসায়ীরা যেসব ডকুমেন্ট দিতে হচ্ছে সেগুলো হল- ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স আই ডিন্টিফিকেশন নাম্বার(টিআইএন) সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্র(এনআইডি), ব্যাংক কারেন্ট একাউন্ট, মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল এড্রেস, পূর্বের কোন নিবন্ধন নম্বর যদি থাকে (যা পুণঃ নিবন্ধনে প্রয়োজন), এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ইআরসি(রপ্তানীকারকের ক্ষেত্রে) এবং লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে ইন কের্পারেশন সার্টিফিকেট বুথে জমা দিলেই নিমিষেই অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধনসহ বিন নাম্বার ও সার্টিফিকেট প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কনকর্ড ট্রাউন সেন্টারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ জালাল আহম্মেদ রুম্মন বলেন, ভ্যাট নিবন্ধন করার প্রত্যেক ব্যবসায়ীর প্রয়োজন। প্রায় ১৩০ জন ব্যবসায়ী রয়েছে। আমরা মাইকিং করে সব দোকান মালিককে জানিয়েছি। ব্যবসায়ীরাও সতস্ফূর্তভাবে ভ্যাট নিবন্ধনে আগ্রহী। ফলে ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসেছে।
এ বিষয়ে কনকর্ড ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ন সম্পাদক বলেন, এখানে বেশির ভাগই নতুন ব্যবসায়ী। ফলে ভ্যাট কি এমনটিও বোঝাতে হয়। সরকারী প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে এ মার্কেটের শতভাগ ব্যাবসায়ী ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে। ফলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক দিকটি বিবেচনা করে সকল ব্যবসায়ী ভ্যাট পরিশোধ করলে জাতীয় আয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাধারা/এফএস/এফএস













