কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা থেকে অপহৃত ৪ কৃষকের মাঝে আবদুস সালাম নামের অপর কৃষকও অবশেষে মুক্তিপণে বাড়ি ফিরেছেন। বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাতে পাহাড় থেকে তিনি নিজ বাড়িতে আসেন বলে জানিয়েছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।
আবদুস সালাম টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। এর আগেরদিন (মঙ্গলবার) রাত আটটায় ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসেন কার সাথে অপহৃত অপর তিন কৃষক লেচুয়াপ্রাং এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে আবদুর রহমান, রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ ও ফজলুল করিমের ছেলে আবদুল হাকিম।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, অপহৃত আবদুস সালামের পরিবারের সদস্যরা তার ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মুক্তিপণের টাকা কার হাতে, কীভাবে পরিশোধ করেছেন, তা কোনোভাবেই প্রকাশ করছেন না পরিবারের লোকজন।
ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলীর মতে, পাহাড়ের পাদদেশে খেত-খামার করে জীবিকা নির্বাহ করেন আবদুস সালাম ও তার স্বজনরা। আবারও অপহরণ কিংবা হামলার হুমকির ভয়ে হয়তো তারা তথ্য দিচ্ছেন না। এলাকাবাসী পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতায় আতঙ্কে আছেন। ফিরে আসা আবদুস সালামকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। তিনি আহত ও ক্ষুধার্ত থাকায় কোনো কথা বলতে পারছেন না।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, মুক্তিপণের বিষয়টি পুলিশ জানে না। এমনকি ঘটনার পর থেকে চারজন কৃষকের পরিবার কোনো ধরনের অভিযোগ পুলিশের কাছে দেয়নি। তবে পুলিশ ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান চালাতে দিন-রাত কাজ করেছে। হয়তো পুলিশের তৎপরতার কারণে একে একে চারজনকে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
৭ জানুয়ারি ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় খেতে পাহারা অবস্থায় চার কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায় একটি চক্র। পরে মুঠোফোনের মাধ্যমে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সন্ত্রাসীরা।
অপহৃত কৃষকদের স্বজনরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অপহৃত চার কৃষকই মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের পরই ছাড়া পেয়েছেন। নগদ টাকা তারা হাতে নিয়ে পাহাড়ের একটু ভেতরে গিয়ে অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের হাতে দিয়েছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, অপহরণের খবর পেলে পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়। পাহাড়ে ততপর রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। তাদের ধরতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। তবে এক্ষেত্রে স্থানীয়দের সহযোগিতা বড় প্রয়োজন। মুক্তিপণ দেয়ার আগে আমাদের জানালে তাদের সহজে ধরা যেতো। কিন্তু অনেকে গোপনে মুক্তিপণ দেয়। আমরা পাহাড়ে যৌথ অভিযান চালানোর কথা ভাবছি।













