২৪ অক্টোবর ২০২৫

অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের তাড়াতেই মিয়ানমারে পরিকল্পিত সংঘাত!

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরকান আর্মির মাঝে চলমান সংঘাতের বাহানায় মিয়ানমারে থাকা অবশিষ্ট রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করে বাংলাদেশ বা অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য করার অপচেষ্টা করছে মিয়ানমার, এমন অভিযোগ সে দেশে বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের। সংঘাত ঘিরে ইতিমধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বেশ কয়েকটি এলাকায় রোহিঙ্গাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেদেশে থাকা রোহিঙ্গারা। শুধু সেনাবাহিনী নয়, আরাকান আর্মির সদস্যরাও রোহিঙ্গাদের যেকোনো জায়গায় চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত প্রায় এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য অবস্থান নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন আতংকিত রোহিঙ্গারা।

মিয়ানমারের মংডুর তুমব্রু এলাকার রোহিঙ্গা নুরুল বশর জানান, মিয়ানমার ও আরকান আর্মির মধ্যেই চলমান সংঘাতের জেরে এদেশে থাকা অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের এলাকা ছেড়ে যেতে বার বার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করতেছি আমরা। এ সংঘাত চলতে থাকলে রোহিঙ্গারা আরকান রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশ বা সীমান্তের অন্য কোন দেশে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। তাদের আশঙ্কা গোলাগুলির বাহানায় ২০১৭ সালের মত রোহিঙ্গাদের ওপরে আবারও গণহত্যা চালাতে পারে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি। ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের সাথে রাখাইন যুবকরাও হামলায় যোগ দেয়। যারা আরাকান আর্মির সক্রিয় সদস্য।

এ অবস্থায় নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢোকার আশঙ্কা করা হলেও সরকার কঠোরভাবে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। কঠোর অবস্থানে রয়েছে সীমান্তে দায়িত্বরত বিজিবি, কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনী। তথ্য এসেছে, এরমধ্যে অনেক রোহিঙ্গা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরকান আর্মির সংঘাতের বিষয়ে নজর রাখা বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এদিকে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পরপর ৫টি মর্টার শেল এসে বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন মোহাম্মদ ইকবাল (২৮) নামে এক রোহিঙ্গা। এসময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৪-৬ জন। ঘুমধুম ঘোনারপাড়া সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডে এ মর্টাল শেল এসে বিস্ফোরণ হয়। ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আতংকিত রোহিঙ্গারা নো-ম্যান্স ল্যান্ড হতে বাংলাদেশের দিকে চলে আসতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, বিজিবি তাদের প্রতিহত করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে শূণ্যরেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শূন্য রেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে এসে পড়ে ৩টি মর্টার শেল। ক্যাম্পের নিটকর্বতী এলাকায় এসে পড়ে আরো ২টি। ৫টি মর্টার শেল পরপর বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে ইকবালের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছে আরো অনেকেই। শনিবার দুপুরে ইকবালকে দাফন করা হয়েছে।

ওই ক্যাম্পের আরেক রোহিঙ্গা নেতা আরিফ জানান, আহতদের মধ্যে ৪ জনকে উদ্ধার করে কুতুপালংস্থ এমএসএফ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিস্ফোরণের পর রাত পৌনে ৯টার দিকে মিয়ানমারের একটি জেট বিমান তুমব্রু বাজারের উপর এসে চক্কর দিয়ে গেছে। এসব কারণে আতংক বিরাজ করছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায়। আহতরা এখনো চিকিৎসাধীন।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কিছু আহত রোহিঙ্গা আসার সংবাদ পেয়ে টহল টিমকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। তবে, হাসপাতালটি ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএনের নিয়ন্ত্রণাধীন।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে অংথোয়াইং তঞ্চঙ্গা (২২) নামে বাংলাদেশি এক যুবক আহত হয়েছেন। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়ার অঙ্গোথোয়াই তঞ্চঙ্গার ছেলে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম জানান, ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়া সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলারের সংলগ্ন মিয়ানমারের ১০০ গজ অভ্যন্তর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে যুবকের একটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা আহত যুবককে উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান হতে সন্ধ্যার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আশিকুর রহমান।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্ত এলাকায় গরু চড়াতে যান অংথোয়াইসহ স্থানীয় কয়েক যুবক। এক পর্যায় গরু সীমান্তের শূণ্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এসময় গরু ফিরিয়ে আনতে সেখানে গেলে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তরে মাইন পুতে রেখেছে।

তবে, এসব বিষয়ে কোন কথা বলতে চাননি বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি), এপিবিএন বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন দায়িত্বশীল সংস্থা।

সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা একাধিক সূত্র ও রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, গত ৩১ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী টানা ছয় দিন স্থল ও আকাশপথে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছিল। আরাকান আর্মির লক্ষ্যবস্তুতে ছোড়া হয়েছিল শত শত আর্টিলারি, মর্টার শেল ও বোমা। বাংলাদেশের ভূখণ্ডেও দুবার মর্টার শেল এসে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। এরপর দুই দিন বিরতি দিয়ে আবার দুপক্ষের গোলাগুলি শুরু হয়। আবার কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে আবারো গোলাগুলি শুরু হয়। শুক্রবার রাতে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে মর্টাল শেল নিক্ষেপের পর শনিবার সকালেও গোলাগুলির শব্দ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুমের স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম। সীমান্তের শূন্যরেখায় রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ঘুমধুম ইউনিয়নের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে প্রায় ১৫ কিলোমিটার।

গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসছে, মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটের মংডুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর ২০১৭ সালের ন্যায় গণহত্যা চালাতে পারে বলে শংকা রয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী ১৩ আগস্ট সন্ধ্যা থেকে রোহিঙ্গাদের চলাচলে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা রোহিঙ্গাদেরকে না খাইয়ে এবং বিনা চিকিৎসায় মারার হুমকি দিয়েছে।

রোহিঙ্গা অধ্যুাষিত অন্যান্য এলাকাগুলোতে বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বুচিদং এবং মংডুতে রোহিঙ্গারা রাস্তায় বের হলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং বিজিপি মারধর করছে। জোরপূর্বক আদায় করা হচ্ছে টাকা। রোহিঙ্গাদের গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেতে নির্দেশও দিয়েছে তারা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য মতে, মংডু জেলায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৫৫১, ৫৫২, ৫৬৪, ৫৬৫ ব্যাটালিয়ন এবং ২২তম ডিভিশন রোহিঙ্গাদেরকে জোরপূর্বক শ্রমে নিয়োজিত করছে। মংডুর ডাবিও চং গ্রামে অবস্থিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৫তম অপারেশনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টার (সা.কা.কা.) এর অধীনে ৩ টি ট্যাকটিকেল গ্রুপ এবং ১টি পদাতিক ব্যাটালিয়ন রয়েছে। মংডুতে স্পেশাল ফোর্স নামে পরিচিত ২২তম ডিভিশনও তাদের শক্তি বাড়িয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রায় দুই লাখের বেশি রোহিঙ্গা এখনো বাস করছে বলে জানিয়েছে সেখানে অবস্থানরতরা।

মংডুর উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার স্থানীয় সূত্র জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের ক্যাম্পে রসদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে কিছুদিন খাবার সংগ্রহ করলেও পরবর্তীতে তারা খাবারের অভাবে ক্যাম্প ছেড়ে চলে যায় ৷ উক্ত এলাকায় আরাকান আর্মির বেশকিছু ক্যাম্প রয়েছে।

মংডুতে বসবাসরত কয়েকজন রোহিঙ্গা অভিযোগ করে বলেন, মূলতো আরকান আর্মির সাথে যুদ্ধের বাহনা করে মিয়ানমারে বসবাসরত বাকি রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে চাইছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গারা বলছে, ইতিমধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলো একে একে ঘিরে ফেলছে। ফেরি যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের এলাকা ছেড়ে চলে না গেলে ২০১৭ সালের চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে বলেও হুমকি দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ অবস্থায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ কিংবা সীমান্তবর্তী যেকোন দেশে প্রবেশের প্রস্তুুতি নিয়ে রেখেছে।

কুতুপালং, বালুখালী, হোয়াইক্যং ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, সংঘাত পরিস্থিতি এ অবস্থায় থাকলে যুদ্ধের বাহনায় আরো লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করতে পারে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ থেকে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন তারা। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বুঝার চেষ্টা করছে। অনেকে সীমান্ত এলাকায় এলেও বিজিবি, কোস্টগার্ডের কড়াকড়ি কারণে এপারে ঢুকতে পারছে না।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার উখিয়ার পালংখালীর মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা পরিদর্শন করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সীমান্তরক্ষী ও শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখানে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম, গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলমান থাকলে পালংখালী সীমান্তে বসবাস করা অর্ধশতাধিক পরিবারকে সরিয়ে নেয়া দরকার।

রোহিঙ্গা প্রতিরোধ ও প্রত্যাবাসন কমিটির সভাপতি উখিয়া উপজেলা চেয়াম্যান হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, পুরোনো রোহিঙ্গারা বিষফোঁড়া হয়ে আছে। ভারত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে রোহিঙ্গারা এসে ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে। ইয়াবা ব্যবসা, অস্ত্রবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে স্থানীয়দের অতিষ্ঠ করে তুলেছে রোহিঙ্গারা। আমরা বিপদে আছি, স্থানীয়রা কোথায় যাবো? নতুন করে কোন রোহিঙ্গা আশ্রয় দিলে উখিয়া-টেকনাফবাসীর আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ থাকবে না। তাই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সিলগালা করে দেয়ার দাবি জানান তিনি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ধারণা চলমান সংঘাতে আরাকান আর্মিদের রোহিঙ্গারা সহযোগীতা করতে পারে বা করছে। এ কারনে হয়তো তারা রোহিঙ্গাদের এলাকা ছাড়তে বা গণত্যার হুমকি দিচ্ছে। নতুন করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার সুযোগ পেলে পরিস্থিত ভয়াবহ হবে। এমন পরিস্থিতিও হতে পারে যে, রোহিঙ্গারা একদিন আমাদের নাগরিক বলে এদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দাবি করে বসবে, ইতিহাস সেটাই বলছে।

যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যলয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ।

তবে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে গোলা আসা বন্ধ না হলে বিষয়টি জাতিসংঘে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজধানীর ধানমণ্ডিতে শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, স্পষ্ট কথা, আমরা এটার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি। আমাদের পক্ষ থেকে না হলে জাতিসংঘের কাছে তুলব, সব কিছু করব। আর কোন রোহিঙ্গা আমরা দেশে ঢুকতে দেবো না। সীমান্তে কঠোর নজরদারি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সেনারা অভিযানের নামে বর্বরতা শুরু করলে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গা ঢল বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। ওই সময় ৭-৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরো৩-৪ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ১২ লাখের বেশি। গত পাঁচ বছরে সোয়া লাখের বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্প গুলোতে। ফলে তাদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

আরও পড়ুন