কক্সবাজার প্রতিনিধি»
কক্সবাজারে এক আইনজীবীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম ওরফে কালা জহিরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা নথিভুক্ত করতে (ট্রিট ফর এফেয়ার) সদর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার আইনজীবি সমিতির সদস্য তাহের আহমদ সিকদার (৫২) এর আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই আদেশ দেন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক জেরিন সুলতানা। এমনটি জানিয়েছেন, বাদি অ্যাডভোকেট তাহের সিকদার।
মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন, মৃত ছাবের আহমদের ছেলে এবং লিংকরোড সিএনজি সমবায় সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন (৪০) , মৃত কলিম উল্লাহর ছেলে ও একই সমিতির সাধারন সম্পাদক রহিম উল্লাহ (৪০) , মৃত সুলতান আহমদের ছেলে মোহাম্মদুল হক (৪৫) এবং কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলামের ব্যক্তিগত বডিগার্ড জাবেদ প্রকাশ বার্মাইয়া জাবেদ (২৫)। তারা সকলেই কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের মুহুরী পাড়ার বাসিন্দা।
আদালতে অভিযোগকারী সদর উপজেলার ঝিংলজা ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মুহুরীপাড়ার মৃত আফতাব উদ্দিন আহমদ সিকদারের ছেলে এবং কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি’র সভাপতি আহত আবু তাহের সিকদার বলেন, সোমবার সকালে আমার মালিকানাধীন একটি মিনিবাস লিংকরোড় জামে মসজিদের সামনে দাড়ায়। ওই সময় অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি জহিরের নেতৃত্বে ৫ জনের একটি দল আমার ও আমার গাড়ির হেলপার ছৈয়দ আলমের উপর হামলা করে। পরে আমাদের শোর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, লিংক রোডে বাস দাড় করানো নিয়ে বিরোধের জেরেই তার উপর পরিকল্পিত হামলা করা হয়েছে।
তবে মামলার প্রধান অভিযুক্ত কক্সবাজার জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম তাকে নিয়ে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তাকে শ্রমিকদের গণধোলাই থেকে রক্ষা করেছি। ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল এবং বর্তমানে জামায়াত নেতা তাহের লিংকরোড় এলাকার সব অঘটনের মূল, এবং মিথ্যুক। চারদল ক্ষমতায় থাকাকালীন মিথ্যা ও বানোয়াট অজুহাতে যেমন মামলা করে আমাদের ভুগিয়েছেন এখনো তেমনটি করছেন। আগে ক্যাডার ও দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করতো আর এখন আইনজীবী পেশাটাকে ক্ষমতার ঢাল বানাচ্ছেন।
গণধোলাইয়ের কারণ ব্যাখা করতে গিয়ে শ্রমিকলীগ সভাপতি বলেন, তাহের সিকদার সিএনজি মালিক-শ্রমিক সমিতির দায়িত্বশীল। দায়িত্বে রয়েছে অন্যশ্রমিক সংগঠনেও। নানা কারণে তিনও প্রায়ই লিংকরোড়ের সিএনজি চালক ও বাস শ্রমিকদের মারধর করে। এনিয়ে শ্রমিকরা ক্ষেপে ছিল তার উপর। সোমবারও এক শ্রমিককে মারধর করে তাহের। তখন শ্রমিক সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা এগিয়ে এসে তাহেরের উপর চড়াও হয়। খবর পেয়ে আমি বাসা থেকে এসে শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে আনি। আমি তাহের সিকদার শ্রমিকদের হাত থেকে বাঁচালাম। আর তাহের সিকদার আমাকেই প্রধান করে অভিযোগ করলো বল জেনেছি। এই হচ্ছে জামায়ত শিবিরের চরিত্র।
এদিকে, কক্সবাজার জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি আবুল কালাম ছিদ্দিকী বলেন, তাহের সিকদার একজন আইনজীবি। তার উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে আদালতে আবেদন করি আমরা। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশকে হত্যা চেষ্টা আইনে অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, এখনো আদালতের নির্দেশনার কপি হাতে পাইনি। পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাধারা/এফএস/এফএস













