২৬ অক্টোবর ২০২৫

আজ কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

বাংলাধারা প্রতিবেদন»

আজ ১২ ভাদ্র, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এদিনে মৃত্যুবরণ করেন চিরতারুণ্যের প্রতীক এই কবি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন তিনি।

‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই/ যেন গোর থেকে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই’-মসজিদের পাশে সমাহিত করার জন্য এই গানের মধ্য দিয়ে তিনি তার সুহৃদ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ করে গেছেন। তা মনে করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবিকে সমাহিত করা হয়।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ‘বিদ্রোহী কবি’ কাজী নজরুল ইসলাম বিশ শতকের বিশ ও ত্রিশের দশকে উপমহাদেশের অবিভক্ত বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের ব্যর্থ অনুকরণ ও অনুসরণের কৃত্রিমতা থেকে আধুনিক বাংলা কবিতাকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে কাজী নজরুল ইসলামের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে ফলপ্রসূ। তাই তিনিই রবীন্দ্রোত্তর সাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ। নজরুল তার কবিতা, গান, উপন্যাসসহ অন্যান্য লেখনী ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পরাধীন ভারতে বিশেষ করে অবিভক্ত বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা, সামন্তবাদ, সাম্রাজ্য ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বলিষ্ঠ ও সোচ্চার কণ্ঠ ছিলেন। সে কারণে ইংরেজ সরকার তার গ্রন্থ ও রচনা বাজেয়াপ্ত করেছে এবং কারাদণ্ড দিয়েছে। কারাগারেও বিদ্রোহী নজরুল টানা চল্লিশ দিন অনশন করে বিদেশি সরকারের জেল-জুলুমের প্রতিবাদ করেছিলেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে ১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে এসে তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করেন।

বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি প্রদান করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় কবিকে।

নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলা একাডেমি। সকাল সাড়ে ৭টায় কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর বিকেল ৪টায় অনলাইনে নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা। সাংস্কৃতিক পর্বে নজরুলের কবিতা থেকে আবৃত্তির পাশাপাশি শিল্পীরা পরিবেশন করবেন জাতীয় কবি রচিত গান।  

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন