৯ নভেম্বর ২০২৫

আজ পবিত্র আশুরা

বাংলাধারা প্রতিবেদক »

আজ মঙ্গলবার (১০ মহররম) পবিত্র আশুরা। কারবালার ‘শোকাবহ এবং হৃদয় বিদারক ঘটনাবহুল’এই দিনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়। বাংলাদেশেও যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভির্যের মধ্যদিয়ে নানা-কর্মসূচির মাধ্যমে এবং সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ মঙ্গলবার পবিত্র আশুরা পালিত হবে।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে আজ সোমবার পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।

হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম  মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। মর্মস্পর্শী এ ঘটনা স্মরণ করে প্রতি-হিজরি সনের ১০ মহররম বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় শোকাবহ দিনটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।

কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়। পবিত্র আশুরা মানেই শোকের-মাতম। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাজিয়া মিছিল’র মাধ্যমে তাদের হৃদয়-নিংড়ানো শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এবছরও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণপূর্বক পবিত্র আশুরার আবশ্যক সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হবে।

আশুরা উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে তাজিয়া মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, তাজিয়া মিছিলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন কিছু বিধি-নিষেধ অরোপ করেছে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে  রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত মিছিলে দা, ছুরি, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন করা যাবে না। পাশাপাশি ফোটানো যাবে না আতশবাজি ও পটকা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

সোমবার এ তথ্য জানান অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ ও জনসংযোগ) শাহাদত হুসেন রাসেল। তিনি বলেন, তাজিয়া মিছিলে পাইক দলভুক্ত ব্যক্তিরা দা, ছুরি, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ করেন, যা ক্ষেত্রবিশেষে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

এটা ধর্মপ্রাণ ও নগরবাসীর মনে আতঙ্ক, ভীতি সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। তাছাড়া মহররম মাসে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়, যা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাজিয়া মিছিলের শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বন্দরনগরীতে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় তাজিয়া মিছিল বের হবে।

রাতের বেলায় তাজিয়া মিছিল এবং রাস্তায় কোনো ধরনের সমাবেশ করা যাবে না। দিনের বেলায় তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে হবে। তাজিয়া মিছিলের জন্য নির্দিষ্ট রুট অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এক রুটের তাজিয়া মিছিল অন্য রুটে যাওয়া বিরত থাকতে হবে। রাস্তায় যান চলাচলের প্রতি দৃষ্টি রেখে তাজিয়া মিছিল পরিচালনা করা এবং তাজিয়া মিছিল চলাকালে রাস্তায় যাতে কোনো যানজট সৃষ্টি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

শাহাদত হুসেন রাসেল বলেন, শোকমিছিল শুরু হওয়ার পরে পথিমধ্যে আশপাশের ছোট ছোট গলি থেকে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ গ্রুপ আকারে বা পাইক হিসেবে যাতে প্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাজিয়া মিছিল চলাকালে নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো প্রকার ব্যাগ, ব্যাগ সদৃশ্য বস্তু, টিফিন বক্স, প্রেসার কুকার, দাহ্য পদার্থ নিয়ে প্রবেশ এবং অবস্থান করা থেকে বিরত রাখতে হবে।

এদিকে আশুরা উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার সরকারি ছুটি। তবে, দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা বিশেষ প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশ করবে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য তুলে ধরতে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

আরও পড়ুন