১ নভেম্বর ২০২৫

আত্মপ্রত্যয়ের মাস ফেব্রুয়ারি শুরু

স্বাগত ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি।বাঙালির রক্তে রাঙানো মাস ফেব্রুয়ারি। আত্মপ্রত্যয়ে উজ্জীবিত হওয়ারও মাস এটি। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি তথা জাতীয় উন্মেষের মাস ফেব্রুয়ারি। এ মাসে নতুন প্রজন্ম খুঁজে পায় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ শিরোনামের সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণীর ইতিহাসকে। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষকাল।

বস্তুত ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে আছে এর গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। কারণ পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি ভাষার জন্য এ মাসে জীবন দিয়েছিল।

ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে নানা কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে উঠবে জমজমাট।

আমাদের জাতীয় জীবনের সব জাগরণ ও স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনার মূলে জড়িয়ে আছে ‘৫২-এর রক্তমাখা ফেব্রুয়ারি মাসের স্মৃতি। ভাষার লড়াইকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব ’৭১-এর রক্তক্ষয়ী মক্তিযুদ্ধের। যার ফলে অভ্যদয় ঘটল স্বাধীন বাংলাদেশের। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে, শহীদ হন অনেকে। সেদিন থেকে ফেব্রুয়ারি মানে ভাষার মাস, ফেব্রুয়ারি মানে রক্ত ঝরানো একুশে ফেব্রুয়ারি।

দক্ষিণ আফ্রিকা ও আসাম ছাড়া পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষার জন্য এমন আন্দোলনের নজির নেই। মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেওয়ার এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর সেই বিরল আত্মদানের স্বীকৃতিও মিলেছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই আজ একুশে ফেব্রুয়ারিকে পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।

ভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানদের আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এর মধ্যদিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের দেশে দেশে পালিত হয়।
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হচ্ছে সেই শহীদদের, যাঁরা ঢাকার রাজপথে ভাষার জন্য তাঁদের জীবন দিয়ে গেছেন।

ভাষার মাসে আমাদের চেতনাকে শাণিত করতে হবে, মাতৃভাষার প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে হবে, বাঙালিত্বকে আলিঙ্গন করতে হবে। কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, প্রাত্যহিক জীবনে তার প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকেও আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ