২৩ অক্টোবর ২০২৫

আত্মার রঙ

অভিশাপের রংটা কী দিয়ে রাঙাবো?
রক্ত দিয়ে?  না,
সে তো বহু আগেই শুকিয়ে গেছে
ইতিহাসের পাতায়।

চোখের জলে?  না,
সেই চোখ তো এখন কাঁদতে জানে না,
কারণ অশ্রুরও এক সীমা আছে
একদিন সে শুকিয়ে যায়,
পরিণত হয় নোনতা কাঁচে,
যেখানে প্রতিফলিত হয়
কেবল নিজের হারিয়ে যাওয়া মুখ।

অভিশাপের রংটা আমি রাঙাবো
নিঃশব্দের কালি দিয়ে
সে নীরবতা,
যে চিৎকারের থেকেও বেশি কষ্ট দেয়,
যে নীরবতা ফেলে যায় হৃদয়ের গভীরে
শূন্যতার প্রতিধ্বনি।

তুমি জানো,
সেই প্রতিধ্বনি কখনো থামে না
যেমন থেমে যায় না রাতের অন্ধকার,
বা থেমে যায় না
কোনো অভিমানী আত্মার দীর্ঘশ্বাস।

হয়তো একটু কালো হবে
কারণ কালো জানে গোপন রাখতে,
যেমন গোপন থাকে
না-পাওয়া ভালোবাসা,
অথবা সেই বিশ্বাস,
যা একদিন ছাই হয়ে
উড়ে গিয়েছিল বাতাসে।

তার ভেতরে মিশিয়ে দেব
সামান্য লাল
যে লাল ভালোবাসার নয়,
বিদ্রোহের, প্রতিশোধের,
একটা দগ্ধ হৃদয়ের আগুনের।

আর দেব কিছু ধূসরতা
ছাইরঙা, নিঃশব্দ,
যেখানে স্বপ্নগুলো মরে গেছে,
যেখানে প্রতিজ্ঞাগুলো
ফিকে হয়ে গেছে সময়ের ধুলোয়।

এই ধূসরটাই হবে আমার শেষ রং
অভিশাপের ক্যানভাসে ছড়িয়ে দেবে
বেদনার এক অদ্ভুত সৌন্দর্য।

অভিশাপের রং কেউ দেখতে পাবে না,
কিন্তু যে একবার অনুভব করবে
সে জানবে, এই রঙে জ্বলে উঠে স্মৃতি,
জ্বলে উঠে হারিয়ে যাওয়া দিনের ছায়া।

এটা কোনো ঘৃণার রং নয়
এটা সেই আত্মার রং,
যে একসময় ভালোবেসেছিল অতি গভীরভাবে,
আর শেষে নিজের ভালোবাসাকেই
শপথ দিয়ে অভিশাপ বানিয়েছে।

এই রং মুছে ফেলা যায় না
না বৃষ্টি দিয়ে, না সময় দিয়ে,
না ভুলে যাওয়ার অভিনয় দিয়ে।
এটা বেঁচে থাকে
চুপচাপ,
অন্ধকারের ভেতর,
একটা ভাঙা আত্মার বুকের গভীরে।

আরও পড়ুন