২৩ অক্টোবর ২০২৫

আনোয়ারায় সাজ্জাদ হত্যার রহস্যে ‘গামছা গ্যাং’-এর চাঞ্চল্যকর তথ্য উন্মোচন

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সিএনজি অটোরিকশা চালক সাজ্জাদ (২২) হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে এক ভয়াবহ অপরাধচক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে ‘গামছা গ্যাং’ নামে পরিচিত এই সংঘবদ্ধ চক্রটি ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ডের সময় ভয়ঙ্কর নৃশংসতা এমনকি ভুক্তভোগীদের চোখ উপড়ে ফেলার মতো অপরাধেও জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাউজান উপজেলার একটি ভাড়া বাসা থেকে আনোয়ারা থানার এসআই শিমুল চন্দ্র ও এএসআই নুরুল আফছারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গ্যাংয়ের মূল হোতা সাইফুলের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম (২৫)-কে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফুল স্বীকার করেছে, সাজ্জাদ হত্যার রাতে সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়। পুলিশের মতে, চক্রটির মূল উদ্দেশ্য ছিল সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাই। তারা রিজার্ভ যাত্রী সেজে চালকদের নির্জন স্থানে নিয়ে মুখ ও হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করত।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গামছা গ্যাংয়ের সদস্য সুমন নামে এক ব্যক্তি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ভুক্তভোগীদের চোখ উপড়ে ফেলত। তদন্তে পাওয়া তথ্যমতে, এই চক্রের হাতে অন্তত ২৬–২৭ জন চালক আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাজ্জাদও একজন।

আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন,

“গামছা গ্যাং আনোয়ারা ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিএনজি ছিনতাই, চুরি ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এটি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র। গ্রেফতারকৃত আশরাফুল হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির গঠন, উদ্দেশ্য ও অন্য সদস্যদের পরিচয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।”

তিনি আরও জানান, আশরাফুলকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তার তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত কিছু সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সাজ্জাদ হত্যার ঘটনায় পুলিশ বরুমছড়া ইউনিয়নের রমজান আলী ও হারুন নামের দুজনকে গ্রেফতার করে। আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সাইফুল ও আশরাফুলের নাম উঠে আসে। পরে চন্দনাইশ থানা পুলিশ পৃথক এক মামলায় মূল হোতা সাইফুলকেও গ্রেফতার করে।

আরও পড়ুন