আনোয়ারা প্রতিনিধি »
আনোয়ারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়। অফিস টাইমে অফিসে না থেকে কলে চিকিৎসা দেয়া, গলাকাটা টাকা নেয়া, বিভিন্ন দিবসে প্রোগ্রাম না করে ভাউচার বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা এবং টাকার বিনিময়ে সরকারি প্রণোদনা প্রদানসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি প্রাণিসম্পদ মেলা আয়োজন নিয়ে এসব অনিয়মের বিষয়টি আবারো সামনে আসে। অভিযোগ উঠেছে, প্রায় তিন লক্ষ টাকা বাজেটের এই প্রাণী সম্পদ মেলা ঠিকমত জমেনি। নির্ধারিত স্টলগুলোও পূরণ করতে পারেনি। তাছাড়া একদিনে মেলাটি বিকাল তিনটার আগেই শেষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মেলায় আগত দর্শণার্থী এবং খামারিরা। ঠিকমত প্রচারের অভাবে মেলার বিষয়টি অনেকেই জানে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। বিভিন্ন উপজেলায় সংবাদ সম্মেলন করে মেলার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালেও আনোয়ারা উপজেলায় তেমন কোনো প্রচার চোখে পড়েনি। ফলে সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যায়ে দেশে এই প্রথমবারের মত ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রাণীসম্পদ মেলা মূল যে উদ্দেশ্য সেটি পূরণ হয়নি বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। আর এসব ব্যর্থতায় অভিযোগের তীর সেই ডা. দেলোয়ারের বিরুদ্ধে। তাঁর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এমনটি হয়েছে বলে প্রাণীসম্পদ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে স্থানীয় সাংবাদিকরা ডা. দেলোয়ারের অফিসে গেলে তিনি রেগে গিয়ে দাম্ভিকতার সাথে বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি, আমার বাড়ী গোপালগঞ্জে, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরবিাররে লোক, কেউ আমাকে কিছুই করতে পারবে না, যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তারা সবাই বিএনপির লোক। বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও আমাকে কিছুই করতে পারবে না, খালেদা জিয়ার পিএস শামসুল আলম আমার বন্ধু। ২২ বছর ধরে আনোয়ারায় কাজ করছি। মাঝখানে দুইবছর চলে গিয়েছিলাম। সবাই আমাকে চাচ্ছে, এজন্য ভূমমিন্ত্রী জাবেদ সাহেব আমাকে আবার এনেছেন।
জানা যায়, ২০০৩ সালে ডাঃ দেলোয়ার হোসেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসাররে (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব নেয়ার ২ বছর আগে আনোয়ারা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে যোগদান করনে। ২০১২ সালের অক্টোবরে তিনি বদলী হলেও ২০১৪ সালের নভেম্বরে আবারো আনোয়ারা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু উপজলোর অর্ধশত খামারীই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেন। দিনের অধিকাংশ সময় তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায় বলে জানা যায়।
এসব অভিযোগের কোন তোয়াক্কাই করেন না ডাঃ দেলোয়ার। অভিযোগরে কথা বলতেই তিনি সাংবাদিকদের সাথে উত্তেজিত হয়ে বলনে, আপনারা যত পারেন লেখেন, আমার কিছুই হবে না। মেলায় সাংবাদিকদের বলা আমার কাজ না। যারা নিজের ইচ্ছায় এসেছে আমরা তাদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আকাশে মেঘ করার কারণে মেলা নির্দিষ্ট সময়ের আগে শেষ করা হয়েছে। আমি নিজের পকেট থেকে ১ লক্ষ বিশ হাজার টাকা দিয়ে ট্রেণিংয়ের জন্য ঘর তৈরি করেছি। সরকার কখন টাকা দিবে সেজন্য বসে থাকিনি।
চাতরী এলাকার খামারী নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, টাকা ছাড়া ডাঃ দেলোয়ারকে পাওয়া যায় না। তিনি কাউকে পরোয়া করে না। প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলার কথা আমরা জানি না।
আনোয়ারা দুগ্ধ খামারী এসোসিয়েসনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান বলেন, উপজেলার অনেক খামারীর অভিযোগ, ডাঃ দেলোয়ারকে পাওয়া যায়না। অনেক সময় গরু মারা যাওয়ার উপক্রম হলেও তাকে পাওয়া যায়না।
জানতে চাইলে জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের এভাবে দম্ভোক্তিতে কথা বলা যাবেনা। আর ওনাকেতো আমিও ফোনে পাইনা। এধরণের গাফিলতির বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
বাংলাধারা/এফএস/এআই













