চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীনের মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর-খুলশী-কাতালগঞ্জ) আসনের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে অনেকের নাম আসছে আলোচনায়। তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। শেষ পর্যন্ত কে পাচ্ছেন এ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিট। তা নিয়ে এলাকার ভোটারদের মাঝে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা, চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে কে হবেন এই আসনের প্রার্থী। ইতোমধ্যে এই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২ জুন বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডা. আফছারুল আমীন। তিনি মরণব্যাধী ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাঁর ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তাঁর মৃত্যুতে গত ৪ জুন চট্টগ্রাম-১০ আসন আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরে ৮ জুন তফসিল ঘোষণার পর আসনটিতে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে চলছে দৌঁড়ঝাপ।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এই আসন থেকে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শোনা গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম, চসিক প্যানেল মেয়র ও ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডের দু’বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সবুর লিটন, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, আফছারুল আমীনের বড় ছেলে ফয়সাল আমীন প্রমুখ।
তবে, এদের অধিকাংশই এখন পর্যন্ত নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। খোরশেদ আলম সুজন, এম মনজুর আলমসহ আলোচিত রাজনীতিকরা গণমাধ্যমকে কোনও মন্তব্য রাজি নন। তবে ডা. আফছারুল আমীনের ভাই ডা. আরিফুল আমীন বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে একজনকে মনোনীত করে তার জন্য নৌকার মনোনয়ন চাওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে কাজ করবেন।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা মাঠের কর্মী, দলের সুখে-দুঃখে সবসময় মাঠে ছিলাম, আছি। তাই আমি দলের মনোনয়ন চাইব। প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব।’
চসিক প্যানেল মেয়র ও ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সবুর লিটন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতি করে আসছি। দলের মনোনয়ন চাইব। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব। নেত্রী যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে পক্ষে কাজ করে যাব, ইনশাল্লাহ।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এক বৈঠকে এই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, আগামী ৩০ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় হচ্ছে ৪ জুলাই। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৬ জুলাই। মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ৭ থেকে ৯ জুলাই। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১০ থেকে ১১ জুলাই। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ জুলাই। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৩ জুলাই। উপনির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। থাকবে সিসি ক্যামেরা।