বাংলাধারা ডেস্ক »
ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নুপুর শর্মা এবং গণমাধ্যম শাখার প্রধান নবীন কুমার জিন্দালের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়ে উঠেছে মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রগুলো থেকে। একই সঙ্গে নবী (সা.) কে বিজেপি নেতাদের অবমাননার দায়ে উপসাগরীয় কয়েকটি দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানও ক্রমবর্ধমান হারে জোরাল হচ্ছে।
বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। গত কয়েকদিন ধরে সারা দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। আন্দোলনকারীরা সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে অফিসিয়ালি এর প্রতিবাদ জানাতে এবং পণ্য বর্জন করতে।
শনিবার (১১ জুন) দুপুর ১টার সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ, দারিদ্র্য, বৈষম্য, মানব উন্নয়ন, অনেক কিছুতে আমাদের এগুতে হবে। আমাদের আশেপাশে, বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো দাঙ্গা-হাঙ্গামা পরিহার করে, অসাম্প্রদায়িক শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে তরতর করে উঠেছে উপরের দিকে। আমাদের দুর্ভাগ্য এখনো আছি আমরা ধর্মীয় রাজনীতি নিয়েই!
ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের স্ট্যাটাসটি হুবহু এখানে তুলে ধরা হলো-
মহানবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে যেকোনো অবমাননাকর মন্তব্য সকল মানবিক মানুষের মনে প্রচণ্ড আঘাত হানে। এর ফলে, মন্তব্যকারী এবং লক্ষ্য, দুই পাশেই উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী শক্তি প্রদর্শন করার সুযোগ পায়৷
আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রায় বিশ কোটি মুসলমান বাস করেন। সে হিসেবে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলমান জনগোষ্ঠীর বসবাস ভারতে, এই সংখ্যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার চাইতে বেশি। নিশ্চয়ই ভারতের বাকি জনগোষ্ঠীর সকলেই সাম্প্রদায়িক হলে, এই বিশাল মুসলমান জনগোষ্ঠী সেখানে বসবাস করতো না!
হাজার বছর ধরে এই উপমহাদেশে ভালো খারাপ সময় মিলিয়েই আমাদের বসবাস। নানান চ্যালেঞ্জ এসেছে, আমরা সেগুলো অতিক্রম করেছি। এমন কোনো কিছুই কোনো পক্ষের করা উচিৎ নয় যেখানে এই অঞ্চলে দাঙ্গা ফ্যাসাদ আরও বেড়ে যাবে।
আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ, দারিদ্র্য, বৈষম্য, মানব উন্নয়ন, অনেক কিছুতে আমাদের এগুতে হবে। আমাদের আশেপাশে, বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো দাঙ্গা-হাঙ্গামা পরিহার করে, অসাম্প্রদায়িক শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে তরতর করে উঠেছে উপরের দিকে। আমাদের দুর্ভাগ্য এখনো আছি আমরা ধর্মীয় রাজনীতি নিয়েই!
এই অঞ্চলে সকল রাজনৈতিক পক্ষের উচিৎ আস্থা আর সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা, সংঘাত আর অবিশ্বাসের নয়। উন্নয়ন কখনও সংঘাতের জায়গায় হয় না। এর জন্য এই অঞ্চলে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন প্রকৃষ্ট রাষ্ট্রনায়কের উদাহরণ।
আমরা জেনেছি, ভারতে অপমানজনক মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অবশ্যই এটি সন্তোষজনক। এই বাংলাদেশে আমরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে, দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে দিবোনা ইনশাআল্লাহ! সকলের প্রতি আহবান, মানবতার মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সুন্নাহ আর আকীদার কথা মাথায় রেখেই, ঘৃণা আর হিংসা পরিহার করে প্রতিবাদ করাই সঠিক পন্থা। উগ্রতা পাল্টা উগ্রতা দিয়ে কখনই নিরসন হয়না। বাংলাদেশকে আমরা সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিড়ে একটি সম্প্রীতি আর স্থিতিশীলতার বৈশ্বিক উদাহরণ হিসেবে পরিচিত করবো।
সকলকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানবিক হেদায়েত দান করুন।
আমীন।













