২৫ অক্টোবর ২০২৫

ইউজিসিকে সকল পরিবারের সামর্থ্য ভাবতে হবে

কাজিম উদ্দিন »

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে।

করোনার কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অন্যসবের মতোই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। যাদের এ সুবিধা নেই তাদেরকে দ্রুত ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আর যাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুবিধা আছে, তাদের অবিলম্বে সে প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে।

পরীক্ষা নেয়া হবে, সেমিস্টার লস দিবেনা। অবশ্যই ভাল সিদ্ধান্ত। তবে এবার সেমিস্টার ফি ছাড়া বা ৫০% কমে পরীক্ষা নিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।কারণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা করোনার ভয়াবহতা থেকে মুক্ত নয়। আর এটিও মনে রাখতে হবে তুলনামূলক ভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফি একটু বেশি।

বর্তমান অবস্থায় অনেক পরিবার রয়েছে যাদের আর্থিক অবস্থা নিদারূণ খারাপ। অনেকেই টিউশন বা পার্ট টাইম চাকুরি করে নিজের ফিস চালায় কিন্তু তাদের টিউশান, পার্ট টাইম চাকুরি সবই এখন বন্ধ। বর্তমান বাস্তবতা‍য় অনেক মধ্যবিত্ত আর নিম্নমধ্যবিত্তদের ঘরে এখন ঠিক মত চুলোয় আগুন জ্বলছেনা। তারা ছেলেমেয়েদের সেমিস্টার/ট্রাইমিস্টার ফি কোথা থেকে দিবে? খেয়াল রাখতে হবে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী শিল্পপতির ছেলে-মেয়ে নয় বরং মধ্যবিত্ত আর নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়ে।

যদিও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলেছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের চাপ দিতে পারবে না। কিন্তু শিক্ষা যেহেতু সেবা খাত আর বর্তমান সংকটময় অবস্থায় সেমিস্টার ফি মওকুফ বা কমিয়ে দেয়া সময়ের দাবি। কারণ ক্ষিদে নিয়ে তখন আর কেউ বসে থাকবে না। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা যা বহন করতে পারবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ রইল।

এখন দেশের এই পরিস্থিতে দেশের কোন মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সামর্থ নেই ছেলেমেয়েদের ট্রাইমেস্টার ফি পরিশোধ করার।

তাই সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টদের যতদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে ততোদিন ভর্তি ফি ও সেমিস্টার ফি মওকুফ সম্ভব না হলেও ৫০% কম রাখার নির্দেশনা দেয়া হোক। ইউজিসি কয়েকদিনের মধ্যে মধ্যে অনলাইনে ক্লাস,ভর্তি এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত একটা নির্দেশনা জারি করবে সেই নির্দেশনায় এই বিষয়টা যেন থাকে। নাহলে বর্তমান পরিস্থিতে ট্রাইমেস্টার ফি পরিশোধ করতে পারবেনা বলে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী স্টাডি গ্যাপের সম্মুখিন হবে। অনেকের লেখাপড়া হয়ে যাবে বন্ধ ।

লেখক : সভাপতি, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগ

আরও পড়ুন