৬ নভেম্বর ২০২৫

ইয়াবা নিয়ে ‘সাংবাদিক’সহ ২ যুবক ধরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজার পৌরসভার লালদিঘী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজারস্থ উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।

গ্রেফতাররা হলো— কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ পশ্চিম আমজাখালীর মৃত সৈয়দ নূরের ছেলে বর্তমানে ঝিলংজার দক্ষিণ মুহুরীপাড়ার (বিসিক শিল্প এলাকা) বাসিন্দা আলী হোসেন (৫০), কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের আলী আকবর ডেইল এলাকার মৃত নুরুল হুদার ছেলে বর্তমান ঝিলংজার দক্ষিণ ডিক্কুল এলাকার বাসিন্দা কথিত সাংবাদিক কামরুল হুদা সোহেল (৩৮)। এদের মাঝে সোহেল আবার জেলা শ্রমিকলীগের একাংশের সদস্য হিসেবেও দায়িত্বপালন করছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক জীবন বড়ুয়া জানান, কয়েকজন মাদক কারবারি কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড় এলাকায় ইয়াবা হাতবদল করবে— এমন খবর পেয়ে উপপরিচালকের সার্বিক সত্ত্বাবধানে অভিযানিক দল সেখানে গিয়ে উৎপেতে থাকে। সদর মডেল থানার লালদিঘীর দক্ষিণ পাড়ের সোনালি ব্যাংকের সামনে রাস্তার দক্ষিণ পাশের ফুটপাতের উপর থেকে গোয়েন্দা তথ্যমতে আলী হোসেন ও কামরুল হুদা সোহেলকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ইয়াবার একটি পুটলা জব্দ করার পর গুনে সেখানে এক হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়। অন্য কারবারিদের বিক্রি করতেই এসব ইয়াবা তারা এনেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।

তিনি আরও জানান, আটকদের মাঝে কামরুল হুদা সোহেলে কাছে দৈনিক স্বাধীন সংবাদ নামে একটি গণমাধ্যমের আইডি কার্ড পাওয়া যায়। সেখানে সোহেল জেলা সংবাদদাতা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। তিনি নিজেকে জাতীয় শ্রমিকলীগ জেলা শাখার সদস্য (সোহেল রানা কমিটির) বলে পরিচয় দেন। কথিত সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতার পরিচয়ে তিনি আলী হোসেনসহ এরকম আরো লোকজনকে দিয়ে ইয়াবা বিক্রি করে আসছেন বলে প্রকাশ পেয়েছে।

অভিযানকারি পরিদর্শক জীবন বড়ুয়া বাদী হয়ে গ্রেফতার দুজনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সোপর্দ করেছেন বলে জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কক্সবাজারস্থ ডিডি মোহাম্মদ রুহুল আমিন।

এদিকে, ইয়াবাসহ গ্রেফতার হওয়া দুজনের মাঝে একজন কথিত সাংবাদিক হিসেবে প্রচার পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রেফতার কথিত সাংবাদিক সোহেল আবার মাদক বিরোধী র্যালীতেও সামনের সারিতে অংশ নেয়ার ছবিও প্রকাশ পেয়েছে। পেশাদার ছিনতাইকারী, রাজনৈতিক ক্যাডার, চিহ্নিত মাদক কারবারিসহ সমাজের প্রতারক শ্রেণির লোকজন অপকর্ম করতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে সাংবাদিকতার মতো মহৎ পেশাকে ঢাল বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নেটিজনরা।

কক্সবাজার সাংবাদিক পরিষদ নেতা সাইফুর রহিম শাহীন বলেন, কারো কাছে পরিচয়পত্র থাকলে বা কোন অপরাধী নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেই যে তাকে সাংবাদিক বলতে হবে এমন কেন? আগে পরখ করে দেখা উচিত সেই নামের গণমাধ্যম বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ওই ব্যক্তির নামে কখনো কোন সংবাদ প্রচার বা প্রকাশ পেয়েছে কি না! এখন সব ধরনের অপরাধীরা অখ্যাত বা ধান্ধাবাজ গণমাধ্যম থেকে টাকার বিনিময়ে পরিচয়পত্র এনে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ সব অপরাধে জড়াচ্ছে। এতে পেশাদার সাংবাদিকরা কোনঠাসা ও লজ্জায় ডুবছেন।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ