প্রতিটি ঈদ কিংবা পর্যটন মৌসুমে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠতো পর্যটন নগরী পাহাড় কন্যা বান্দরবান। দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকের সমাগমে ভীড় জমে যেত বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের দর্শণীয় স্থানগুলোতে। অগ্রিম বুকিং হয়ে যেত জেলার হোটেল-মোটেলগুলো। কিন্তু বর্তমান নানা পরিস্থিতি সম্মুক্ষীন হওয়ার কারণে এবার ঈদে আশানুরুপ পর্যটকের আগমন ঘটেনি বান্দরবানে। আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরও তেমন পর্যটক না আসায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত ব্যাবসায়ীরা।
জানা গেছে, বান্দরবানে গত প্রায় নয় মাস ধরে চলছে জঙ্গী ও কেএনএফ বিরোধী আইন শংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান। যার ফলে নিরাপত্তা বিবেচনায় গত নয় মাস ধরে জেলার রোয়াংছড়ি,রুমা ও থানছি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা শহরের নীলাচল, মেঘলা, প্রান্তিলেক, শৈলপ্রপাত, নীলগিরীসহ পর্যটন কেন্দ্রে তেমন দেখা যায়নি পর্যটকের চিত্র। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে হাতেগোনা কয়েকজন পর্যটক আগমন ঘটলেও পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক স্থান থেকে অন্যস্থানে। এবার ঈদের পর্যটন কেন্দ্রগুলো মুখরিত হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ স্থানীয় পর্যটক। তাছাড়া ঈদে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও পর্যটকদের তেমন আগমন না ঘটায় খালি পড়ে আছে হোটেল-মোটেল। তবে ষ্টেশন থেকে পর্যটকদের নিয়ে তিনটি পর্যটন কেন্দ্রে ছেড়ে গেছে দেড়শত চান্দের গাড়ি।
ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটক সুনেন্দু, মিমি ও রেখা দাশ জানান, ঈদের টানা পাচঁদিন ছুটিতে নীলাচল ও মেঘলাতে ঘুরতে এসেছেন পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। তবে তাদের পরিকল্পনা ঘোরার স্থান ছিল দেবতাকুম ও থানচি বড় পাথর। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারনে নীলাচল ও মেঘলা ঘুরে কক্সবাজার দিকে রওনা দিবেন।
নীলাচল ও মেঘলা টিকেট কাউন্টারে কথা হয় সুমি মারমা ও সুকুমার তংঞ্চঙ্গ্যাঁর সাথে। তারা জানান, গেল বছরের ঈদের টানা ছুটিতে নীলাচল ও মেঘলা পর্যটকের আগমন ছিল ভরপুর। কিন্তু এবার ঈদের ছুটিতে পর্যটক তেমন আসেনি। প্রতিদিনে টিকেট বিক্রি হচ্ছে এগারশত থেকে বারশত। তাছাড়া অধিকাংশ স্থানীয় পর্যটক বেশী।
বান্দরবান জীপ ও মাইক্রোবাস সমিতি লাইনম্যান কামাল জানান, ঈদে মোটামুটি পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। নীলাচল, মেঘলা ও নীলগিরী এই তিনটি পর্যটন কেন্দ্রে ষ্টেশন থেকে দেড়শত চান্দের গাড়ি ছেড়ে গিয়েছে।
হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি সভাপতি অমল কান্তি দাশ জানিয়েছেন, এবার ঈদের তেমন কোন পর্যটকদের আগমন ঘটেনি। ঈদে পর্যটকদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েও হোটেল-মোটেলে মাত্র ২০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। এতে হোটেল-মোটেলে জড়িত থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা দিনদিন লোকসানের দিকে এগোচ্ছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানান, তিন উপজেলা ব্যতীত আরো চার উপজেলা পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলা রয়েছে। সেসব উপজেলাতে আশা করি পর্যটকদের আগমন ঘটবে। তাছাড়া এবার ঈদের ছুটিতে নীলাচল ও মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই ছাড় আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।













