খালেদ মনছুর, আনোয়ারা প্রতিনিধি »
আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের কান্দরিয়া খালের উপর নির্মিত স্লুইস গেটের ক্রস বাঁধ ভেঙ্গে উঠানামা করছে জোয়ারের পানি। এতে করে এ অঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন জোয়ারের পানি উঠানামা করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ।
স্লুইসগেট ও বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিয়ম আর দুর্ণীতির কারণে এক মৌসুমেই বিলীন হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ। ফলে এখন স্লুইস গেটটি হুমকির মুখে পড়েছে। চাতরী ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার একর জমিতে এবারের আউশ ধান রোপনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এ অবস্থায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হলে চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ পরিদর্শন করেছেন। আগামীকাল (০১ আগস্ট) থেকে মেরামতের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন।
এদিকে উপজেলার পূর্ব বারখাইনে শঙ্খ নদীর তীরে নির্মিত বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ মেরামতের তিন মাস না যেতেই আবারো ভেঙ্গে গেছে। এতে জোয়ারের পানি উঠানামা করছে প্রতিদিন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে চাষাবাদ। পূর্ব বারখাইন এলাকার শত শত কৃষক এখন চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায়। এ ছাড়া জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে মানুষের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, পুকুর ও মাছের ঘের। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এলাকার জনসাধারণ।

জানা যায়, গত এপ্রিল মাসে শঙ্খ নদীর তীরবর্তী পূর্ব বারখাইন এলাকার বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিলে ভূমিমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। বারখাইন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশের মেরামতের কাজ করেন। কিন্তু তিন মাস না যেতেই একই স্থানে বেড়িবাঁধ ফের ভেঙ্গে যায়। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও শঙ্খ নদে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রতিদিন জোয়ারের পানি উঠানামা করায় শঙ্খায় রয়েছেন কৃষকরা। বর্তমান আমন চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। এভাবে বেড়িবাধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি উঠানামা করতে থাকলে আগামী আমন মৌসুমের চাষাবাদ আদৌ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আমীর হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশটি মেরামত করেছে তিনমাস হয়েছে। এর মধ্যে আবার ভেঙ্গে গেছে। এখন আমারা প্রতিদিন জোয়ার ভাটায় ভাসছি।
বারখাইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিন লাখ টাকা দিয়ে এর চেয়ে আর ভাল কাজ কীভাবে করা হয় আমার জানা নাই। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করে কাজটি করেছি। টানা বৃষ্টির কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এখানে চিহ্নিত একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, চাতরী ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ আমরা পরিদর্শণ করেছি। কাল থেকে মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
বাংলাধারা/এফএস/এআই