২৬ অক্টোবর ২০২৫

‘উদ্দেশ্য একটাই; প্রিয় সাথীকে যেন জীবনের তরে একবার অন্তত দেখি!’

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসক। যাকে শিক্ষার আলোও বলা হয়। তিনি প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ জামশেদ আলম। গত ২৮ ডিসেম্বর (শনিবার) ময়মনসিং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের ১১ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের সিগন্যালস্ কোরের পূণর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।

সেই পুণর্মিলনী ও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার ইতিহাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। স্ট্যাটাসটির পুরো অংশটা হুবহু বাংলাধারা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো

‘ময়মনসিংহ আমার প্রিয় শহর। ৪৮ বৎসর আগে তার সাথে আমার পরিচয়। ৭১ এর মার্চ মাসে ঢাকা থেকে ছিটকে কয়েকজন সমবয়সী যুবক বেরিয়েছিলাম অজানার উদ্দেশ্যে। উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধে যাবো। কোথায় যুদ্ধ কোথায় রণক্ষেত্র কোথায় অস্ত্র, কিছুই জানা ছিল না, শুধু জানা ছিল শত্রুকে, তাকে নিধন করতে হবে। বিজয় ছিনিয়ে নিতে হবে মুক্ত করতে হবে দেশ মাতৃকাকে।’

‘ময়মনসিংহে সাময়িক অবস্থানের পর পৌঁছে যাই ট্রেনিং ক্যাম্পে। অস্ত্র চালনা শিখি, শিখি কি ভাবে গ্রেনেড ছুড়তে হয়, কি ভাবে ফিউজ ডেটোনেটর এক্সপ্লোসিভ লাগিয়ে ব্রীজ কালভার্ট উড়িয়ে দেয়া যায়, কিভাবে মোর্সকোড ব্যবহার করে সংবাদ পাঠানো যায়। যুদ্ধ কোন ছেলেখেলা নয়। এক অসম যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলো বাঙ্গালী জাতি।’

‘এ যুদ্ধে পরাজিত হলে অনন্ত কাল ধরে এ জাতি পরাধীনতার জোয়াল আর গ্লানি বয়ে বেড়াতো। ১১ নং সেক্টর ছিলো আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র। রণাঙ্গনের কিছু সাথী আয়োজন করেছিলো ৪৮ বছর পর এক ছোট্ট পূণর্মিলনীর অনুষ্ঠান। সেই ময়মনসিংহ শহরে।’

‘ময়মনসিংহের মুক্ত যুদ্ধে আমরা অংশ নিয়েছি। হানাদারদের পরাজিত করে ১৯৭১ এর ১০ ডিসেম্বর তারিখে আমরা এই শহর শত্রুমুক্ত করি। সহযোদ্ধারা এসেছিলো দূরদূরান্ত থেকে। রংপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, নেত্রকোণা আরো কত দূরের জনপদ থেকে। উদ্দেশ্য একটাই, প্রিয় সাথীকে যেন জীবনের তরে একবার অন্তত দেখি! বুকে বুক মিলাই। আবার দেখা হবে কি বন্ধু?’

মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ জামশেদ আলম

আরও পড়ুন