৬ নভেম্বর ২০২৫

উন্মোচনের অপেক্ষায় বাঙালির শৌর্যের প্রতীক ‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য

বোয়ালখালী প্রতিনিধি »

বিটিশবিরোধী আন্দোলন, যুব বিদ্রোহ তথা ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি এই ত্রয়ী স্বত্বার যুগপৎ ভাস্কর্য শিল্পের উপস্থাপনায় চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নির্মিত ‌‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য এখন উন্মোচনের অপেক্ষায়।

সারোয়াতলি ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বেলাল হোসেনের উদ্যোগে ও অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে ভাস্কর্যের নির্মাণ কাজ করছেন চবি গবেষক ভাস্কর শিল্পী ডি কে দাস মামুন।

তিনি জানান, স্বাধীন বাংলায় ভাস্কর্য চর্চা নানাভাবে দীর্ঘ সময় ধরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলে আসলেও বাঙালির যুব বিদ্রোহ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে একই বেদীতে উপস্থাপন হয়নি। দেশে এই প্রথম বাঙালির বিপ্লব, সংগ্রাম ও স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতাকে একই সাথে এক মঞ্চে শৈল্পিক দ্যেতনায় উপস্থাপনে শিল্পী তার বিষয় বোধকে গুরুত্ব সহকারে আধুনিক কর্ম কৌশলকে ব্যবহার করে মোল্ট ও স্টোন কাস্ট পদ্ধতিতে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

ভাস্কর ডি কে দাস মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনকে ছয়টি বলিষ্ঠ হাতে উড্ডীন পতাকা উড়িয়ে নির্মিত ভাস্কর্যের বেদীমূলে যুব বিদ্রোহের শহীদদের নামের রেপ্লিকা স্থাপিত হয়েছে। এতে যুব বিদ্রোহ আর মহান মুক্তিযুদ্ধ দুয়ে মিলে বাঙালির চিরমুক্তির প্রেরণা ও অঙ্গীকার একাকার হয়েছে। এছাড়াও স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে তেপান্তরের পানে ছোটার যে গতি তা ফুটিয়ে তুলতে এই ভাস্কর্যে রয়েছে পাঁচ যুবা ও কাকন পরা এক যুবতীর বজ্রমুষ্ঠি।

বাংলাদেশের রাষ্ট্র নির্মাণের ৪ মূল নীতিকে ধারণ করে চারটি সিঁড়ি বেয়ে প্রশস্ত প্লাট ফর্মের মাঝে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত রেপ্লিকা, ডানে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান খচিত স্টোন কাস্ট পদ্ধতিতে জাতির পিতার প্রতিকৃতি এবং ঠিক মাথার উপর স্থাপন করা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রিয় পতাকাটি।

ভাস্কর্য নির্মাণ কাজে সমন্বয়কের ভূমিকায় রয়েছেন সাংবাদিক মো. তাজুল ইসলাম রাজু, সহশিল্পী হিসেবে কাজ করছেন রাসেল দত্ত রাজু, আজমাইন ইসলাম, অমলেন্দু রাহা, এস ডি শ্যামল, জাহানারা পারুল ও মো. মিজান।

মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, বাঙালি জাতির সংগ্রামী ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে জানাতে এই ‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবীদের আত্মীয় স্বজনদের আবেদন ছিলো দীর্ঘদিন ধরে। তারই প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন আমার বাবা মরহুম আবুল বশর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক ছিলেন। আমি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেই হিসেবে স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রামের স্মৃতি জড়িত স্থান সংরক্ষণ ও জাতির বীরদের স্মৃতি জাগরুক রাখার বার্তা দিতেই এ ভাস্কর্য।

প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য নির্মিত হচ্ছে। এর নকশা ও পরিকল্পনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ভাস্কর ডি কে দাশ মামুন। ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর এ ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়।

আগামী ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এর উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ