৫ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম-১৫ আসন

এমপি নদভী ও তার স্ত্রীকে ইউজিসির শোকজ

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীকে শোকজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

চট্টগ্রামে অবস্থিত বেসরকারি আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) ব্যাংক হিসাব থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে টাকা উত্তোলন করায় তাদের শোকজ করা হয়।

আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিচালক মো. ওমর ফারুক এই শোকজ পত্রে স্বাক্ষর করেন। আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তাদেরকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আইআইইউসির রেজিস্ট্রার সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। রেজিস্ট্রারের দেওয়া তথ্যমতে, সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি থেকে এই শোকজ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, এক ব্যক্তি আইআইইউসির ব্যাংক হিসাব থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ উত্তোলনের বিষয়ে অভিযোগ করেন। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে গত ৩ ডিসেম্বর দুদকের পরিচালক উত্তম কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করে। দুদকের ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যকে শোকজ করে নোটিশ ইস্যু করে। শুক্রবার রাতে আইআইইউসির রেজিস্ট্রার বরাবরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতি মাসে সম্মানী বাবদ ৭ লাখ টাকা করে মোট ১৪ লাখ টাকা সম্মানী গ্রহণ ও ব্যবহৃত ব্যক্তিগত গাড়ির জ্বালানি বাবদ ২ লাখ টাকা, গাড়িচালকের বেতন বাবদ ৭০ হাজার টাকা এবং ব্যক্তিগত সহকারীর বেতন প্রদান করা হয়।

যা তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রের হলফনামায়ও উল্লেখ করেছেন। হলফনামার তথ্যমতে, এমপি আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন মো, নদভী বছরে এক কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ৪৪২ টাকা আয় করেন। যা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বছরে তিনি মিটিং ও সম্মানী বাবদ এ ভাতা পান।

এছাড়া তিনি জাতীয় সংসদ থেকেও বছরে ২৩ লাখ ১৫ হাজার ৭০৭ টাকা পান। আয়ের বাইরেও আইআইইউসি থেকে তিনি ঋণও গ্রহণ করেছেন। যার পরিমাণ ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীসহ নদভীর ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরাও এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে বছরে ৪৪ লাখ ২২ হাজার ৪৪৬ টাকা ভাতা পান। এসব বিষয়সহ আরও কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনে প্রেরণ করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, ট্রাস্ট আইন ১৮৮২-এর ৫০ ধারায়’ ‘এ ট্রাস্টি হ্যাজ নো রাইট টু রিমিউনারেশন ফর হিজ টেরিবল স্কিল অ্যান্ড লস অব টাইম ইন এক্সিকিউটিং দ্যা ট্রাস্ট’ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০-এর ধারা ৪৪(৭) মোতাবেক বেসরকারি সাধারণ তহবিলের অর্থ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশে ব্যয় করা যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে।

উল্লিখিত আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের ওইরূপ আর্থিক সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেই। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক প্রেরিত সংযুক্ত অভিযোগের বিষয়ে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রেরণের অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ