২৩ অক্টোবর ২০২৫

ওয়াহিদ ফাউন্ডেশনে প্রতারণা, বাতেনের বিচার দাবি

ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান’স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সম্পদ আত্মসাৎ, এতিমখানা বন্ধ, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণসহ নানা অভিযোগে আলোচিত আব্দুল বাতেনের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ ও ছাত্রজনতা।

সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৪টায় নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার আরাকান রোডে ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম এ. এম. ওয়াহিদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এতিমখানা বন্ধ করে সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ এবং সিডিএর অনুমোদন ছাড়া দোকান গড়ে তোলার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট সমাজসেবক আহমেদ কবির বলেন, “আব্দুল বাতেন শুরুতে ধর্মীয় লেবাসে নিজেকে উপস্থাপন করলেও পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি একজন দুর্ধর্ষ প্রতারক। প্রতিষ্ঠানের নামফলক পর্যন্ত তুলে ফেলেছেন, গঠন করেছেন পকেট কমিটি, আত্মসাৎ করেছেন কোটি টাকার সম্পদ। এ.এম. ওয়াহিদের মতো জনহিতকর ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠান রেখে গেছেন, তাকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না।”

এছাড়াও বক্তৃতা দেন সোসাল একশান ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশের চিফ ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ, যুবদল নেতা মোহাম্মদ আরিফ, ছাত্রনেতা রায়হান ছিদ্দিকী, তাওহিদুল ইসলাম তুহিন, মো. সাহাবউদ্দীন, মানবাধিকারকর্মী মো. ফরহাদ ও ভুক্তভোগী সদস্য জাহাঙ্গীর।

ফাউন্ডেশনের সদস্য এম. আওলাদ বলেন, “বাতেন গত ২৮ মাসে কোনো কার্যক্রম চালাননি। গরিব-দুস্থদের জন্য বরাদ্দ অর্থ তুলে নিয়ে গেছেন এককভাবে। সমাজ ও এতিমদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।”

মানববন্ধন থেকে বক্তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন:

১. আব্দুল বাতেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত।

২. প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে ফাউন্ডেশন পরিচালনা।

৩. বাতিল করতে হবে বাতেনের গঠিত পকেট কমিটি এবং পুনরায় সেবা কার্যক্রম চালু করতে হবে।

৪. বিগত ২৮ মাসের আয়-ব্যয়ের পূর্ণ হিসাব প্রকাশ ও আত্মসাৎকৃত অর্থ ফিরিয়ে এনে জনসেবায় ব্যবহার।

৫. বাতেনকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তারা বলেন, এই ফাউন্ডেশনটি ছিল অসহায়, গরিব-দুস্থ ও এতিম শিশুদের সহায়তায় একটি আশার নাম। অথচ সেটি এখন প্রতারণা ও ক্ষমতার দখলদারিত্বের শিকার। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে, আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

একজন জনদরদী ব্যক্তির উদ্যোগে গড়ে ওঠা ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান’স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন যেন প্রতারণার বলি না হয়—এমন প্রত্যাশাই এখন চট্টগ্রামের সচেতন জনতার। প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার দাবি সবার।

আরও পড়ুন