ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ এনে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ছয়জনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রীর করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এই আদেশ দেন। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
গত ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন তামান্না বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। এতে অভিযুক্ত করা হয় বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, এসআই জগৎজ্যোতি দাস, মনিরুল ইসলাম, ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন, ‘সন্ত্রাসী’ জাবেদ ও পুলিশের সোর্স আনিকা ইসলামকে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফকে লাঞ্চিত হুমকি দেয় সাজ্জাদ।
এরপর মামলার আবেদন করে সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না। মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি শারমিন তামান্নার স্বামী সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারে পুলিশ বাসায় অভিযান চালায়। স্বামীকে না পেয়ে এসআই মনিরুল ইসলাম তাঁকে আটক করেন। এ সময় পুলিশ ও সোর্সরা তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও সন্ত্রাসী জাবেদ পুলিশের সামনে শারমিনকে মারধর করেন। থানার ওসি শারমিনকে লাঠি দিয়ে মারধর এবং এসআই জগৎজ্যোতি দাস বাদীর পেটে লাথি মারেন। বাদী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় রক্তক্ষরণে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাদীকে আদালতে হাজির না করে ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হাজির করেন। ৮ জানুয়ারি আদালত বাদীকে জামিন দেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানান গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় সাজ্জাদের স্ত্রী বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করায় রিমান্ডে থাকা আমার স্বামীর কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরানো হচ্ছে। প্রতিশোধ নিতে পুলিশ তা করছে।
উল্লেখ্য গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেন লোকজন। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি তাঁকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন নগর পুলিশ কমিশনার। তার আগের দিন সাজ্জাদ বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফেসবুক লাইভে এসে পেটানোর হুমকি দেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া অ্যাকসেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেট কারকে ধাওয়া দিয়ে গুলি করে ঝাঁঝরা করা হয়। এতে দুই আরোহী নিহত হন। ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের ধারণা। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার জেরে তাঁর অনুসারীরা সরোয়ারের সহযোগীদের ওপর হামলা চালান বলে প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিশ। সাজ্জাদ বর্তমানে চান্দগাঁও থানার ইট, বালু ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন খুনের মামলায় রিমান্ডে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।