২ নভেম্বর ২০২৫

ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যার অভিযোগ

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

বন্দুকযুদ্ধ নাটকে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে মিজানুর রহমান নামের আরো একজনকে খুনের অভিযোগ এনে ওসি প্রদীপসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যার অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এই মামলার আবেদন করা হয়। নিহত মিজানুর রহমানের বড়বোন নূর বাহার বাদি হয়ে এই মামলার আবেদন করেন।

মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। নিহত মিজানুর রহমান হোয়াইক্যংয়ের জিমনখালী এলাকার বাসিন্দা। বাদির আইনজীবী জুলখার নাইন জিল্লুুর গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। মেজর সিনহা হত্যা মামলায় কারান্তরিণ থাকা ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগে এটিসহ ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার আবেদনে বাদি উল্লেখ করেন, মিজানুর রহমান খেটে খাওয়া মানুষ। গত ৪ এপ্রিল টেকনাফ থানা পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে নিয়ে যায়। এরপরও পুলিশ তার বাড়িঘর, আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ২০ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। না দিলে বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। বাধ্য হয়ে পরিবার নানাভাবে চেষ্টা করে ২ লাখ টাকা জোগাড় করে পুলিশকে দেয়। কিন্তু আরো ১৮ লাখ টাকা দিতে না পারায় ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজের এলাকায় এনে মিজানুর রহমানকে বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা করে।

আইনজীবি জুলখার নাইন জিল্লুর বলেন, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনা সংক্রান্ত অন্য মামলা আছে কিনা তা আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফের আগে কক্সবাজারের মহেশখালী থানা, সিএমপির পতেঙ্গা, বায়েজিদ ও পাঁচলাইশ থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসব জায়গায় কাজ করতে গিয়ে বিস্তর সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। যেখানেই দায়িত্ব পালন করেছেন সেখানেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। একাধিকবার স্ট্যান্ড রিলিজও হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই অদৃশ্য ছায়ায় পার পেয়ে গেছেন প্রদীপ কুমার দাশ।

সর্বশেষ টেকনাফ থানায় যোগদান করে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন প্রদীপ কুমার দাশ। মাদক ব্যবসার তকমায় ব্যবসায়ী ও নিরহদেরও বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যার অভিযোগে রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া নিরীহ লোকজনকে বন্দুকযুদ্ধের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। মেজর (অব.) সিনহা নিহতের ঘটনার পর ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যার অভিযোগ, সাংবাদিক নির্যাতনের দায়ে ও দুর্নীতির অভিযোগে এর আগে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ওই ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারের একটি আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন, সেখানে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকতসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে র‌্যাব। ওই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর প্রদীপকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। স্ত্রীসহ তার নামে দায়ের হওয়া দুদকের মামলায় হাজির করাতে ১২ সেপ্টেম্বর ওসি প্রদীপকে কক্সবাজার কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বাংলাধারা/এফএস/এএ

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ