২৫ অক্টোবর ২০২৫

ওসি প্রদীপ-লিয়াকতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে আদালত চত্বরে মানববন্ধন

কক্সবাজার প্রতিনিধি‘»

মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার শীর্ষ দুই আসামী বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলী চক্রের শাস্তি নিশ্চিত দাবিতে মানব বন্ধন করেছেন নির্যাতিত ও সচেতনমহল। 

সোমবার (২৩ আগস্ট) দুপুরের দিকে আদালত চত্বরে ‘অসহায় নির্যাতিত সমাজ ও লাভ বাংলাদেশ’র ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সিনহা হত্যা মামলার স্বাক্ষ্য চলছিল। 

মানববন্ধনে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের জেলা সভাপতি নাজনীন সরওয়ার কাবেরী ও আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সমন্বয়ক মহসীন শেখসহ নির্যাতিত অর্ধ-শতাধিক পরিবারের প্রায় দুই শতাধিক লোকজন অংশ নয়ে ওসি প্রদীপ, লিয়াকত বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এসময় আদালতে হাজির করা হয়েছে ১২ পুলিশ সদস্যসহ ১৫ আসামীকে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। তাঁর সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তাঁর ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করে। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।

সিনহা হত্যার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের ৯ সদস্য। তাঁরা হলেন, বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।

অপর আসামিরা হলেন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্য যথাক্রমে এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

বাংলাধারা/এফএস/এফএস

আরও পড়ুন