বাংলাধারা প্রতিবেদন »
ওয়াসার পানিতে হঠাৎ করে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির সংকটে রয়েছেন নগরবাসী, এর কারণ জানতে ওয়াসার এমডি’র কাছে ছুটে গেল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
বুধবার (২ জুন) সকালে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ’র সাথে তাঁর দফতরে পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বিষয়ে এক মতবিনিময় করেন তিনি।
এ সময় সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রামের জনগনের কাছে সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে ওয়াসার পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নতুন পানি শোধনাগার প্রকল্প গ্রহণ এবং এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থানও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে সম্প্রতি ওয়াসার পানিতে সহনীয় পর্যায়ের চেয়েও বেশি পরিমানে লবনাক্ততা দেখা দিয়েছে। এতে করে সুপেয় পানির সংকটে পড়েছেন নগরবাসী। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ার সংবাদও পাওয়া গেছে। ফলে গ্রাহকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। নগরবাসী কেন টাকা দিয়ে লবন পানি কিনে খাবে সে প্রশ্নে উত্তর জানতে চায় তারা। তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে ওয়াসার পানিতে লবণাক্তের পরিমাণ কমিয়ে আনার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে ওয়াসার এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং এলাকার গেইট বাল্বটি বন্ধ করে রাখছে পানি ব্যবসায়ীরা। যে কারণে ৩৯, ৪০ ও ৪১নং ওয়ার্ডের লাখো গ্রাহক পানি বাণিজ্যকারীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ওয়াসার পাইপ লাইনে পানি না থাকলেও ছোট ছোট ট্যাংকে ভরে দেদারছে ওয়াসার পানি বিক্রি হচ্ছে ঐসব এলাকায়। এছাড়া নগরীর ৪নং চাঁদগাও ওয়ার্ডে বেশ কিছুদিন ধরে পানি সংকটের খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়েছে। ওয়াসার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাঝে মাঝে এসব অসাধু পানি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করলেও বর্তমানে অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় ঐসব অসাধু ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নগরীর কিছু কিছু এলাকায় ওয়াসার সঞ্চালন লাইন থাকলেও পানি সরবরাহ নেই, আবার অনেক এলাকায় সঞ্চালন লাইনও নেই।
এসব বিষয়ে ওয়াসার এমডি’র দৃষ্টি আকর্ষন করেন সুজন। তাছাড়া রিংরোড চৌচালা বড়পুল সংযোগ সড়কের বিষয়েও ওয়াসার এমডি’র সাথে ফলপ্রসু আলোচনা করেন তিনি। সিডিএ’র সাথে আলাপ আলোচনা করে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নির্মাণে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ লবণাক্ততার পরিমান বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া এবং কাপ্তাই লেকের পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হালদা নদীতে কর্ণফুলীর পানি প্রবেশ করেছে। আর এ কারণেই লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। লবণাক্তের কারণে শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প ও মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে পানি উৎপাদন আপাতত বন্ধ রেখেছে ওয়াসা। তবে বৃষ্টি এলেই লবণাক্তের পরিমাণ পুরোপুরি কমে যাবে বলে জানান তিনি।
নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহ করতে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার থেকে পানি সরবরাহ করবে ওয়াসা। পতেঙ্গা এলাকার দীর্ঘদিনের পানির সমস্যা নিরসনে ওয়াসা কাজ করছে বলে জানান এমডি। এ লক্ষ্যে একটি প্রতিনিধি দলও সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে প্রকৃত তথ্য আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছে। আর সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় গেইট বাল্বটি বন্ধ করা বিষয়ে ওয়াসার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবেন বলে আশ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মো. বাবলু, মনিরুল হক মুন্না প্রমূখ।
বাংলাধারা/এফএস/এআই













