২৪ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারে কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের পর সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল এগারোটার দিকে কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংকরোড এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। দুপুর বারোটার দিকে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কক্সবাজার সরকারি কলেজে দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় কলেজে আগে থেকে অবস্থান করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের বহিরাগত দাবি করে ধাওয়া করে। তাদের ধাওয়া খেয়ে আন্দোলনকারীরা লিংক রোড়ের দিকে চলে যায়।

প্রায় ১০/১৫ মিনিট পর আন্দোলনকারীরা লাঠিসোটা নিয়ে কক্সবাজার কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দিকে এগুলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক বলেন, কলেজে একাডেমিক ‘আইসিটি’ পরিক্ষা চলছিল। হঠাৎ শিক্ষার্থী নামধারী বহিরাগত শিবির ক্যাডাররা কলেজে প্রবেশ করতে চাইলে আমরা বাঁধা দিই। পরে তারা সশস্ত্র অবস্থায় ক্যাম্পাসে প্রবেশেট চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থী তাদের ধাওয়া দেয়। পরে ক্যাম্পাসের বাইরের থেকে আমাদের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে তারা।

জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীরা সবাই পরীক্ষা কেন্দ্রে। হঠাৎ করে বহিরাগত সশস্ত্র কিছু যুবক ক্যাম্পাসে অস্থিরতার চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিরোধ করেছে। মূলত আন্দোলনকে ব্যবহার করে শিবিরের দায়িত্বশীলরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, সোমবার রাত থেকে কোটা বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিতে আহবান জানান শিবির নেতারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ম্যাসেঞ্জারে তাদের তথ্য ফাঁস হলে সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ।

এ বিষয়ে আন্দোলনকারীদের অনেকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কোন কমেন্ট করতে রাজি হয়নি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, কলেজের পোশাক পড়া কিছু যুবক লিংক রোড়ে সড়ক অবরোধ করতে পারে-এমন তথ্য পেয়ে আমরা সেখানে অবস্থান করি। কিছুক্ষণ পর তারা মিছিল করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তারা কক্সবাজার সরকারি কলেজের দিকে গেলে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়। দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। এখন সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। কোটা সংস্কার নিয়ে আইনমন্ত্রী সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না

কোটা সংস্কার দাবিতে রাজপথে যত আন্দোলন-সংগ্রাম করা হোক না কেন, সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে সরকার কিছুই করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, ‌‘কোটা রাখা না রাখা নিয়ে একটা প্রশ্ন সামনে এসেছে যে, এটা তো সরকারের ব্যাপার, আদালতের ব্যাপার না। আমরা আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। আমরা সর্বোচ্চ আদালতকে সম্মান করবো এবং বাস্তবায়ন করবো। সর্বোচ্চ আদালতে পাশ কাটাবো না, কিছু করবোও না।’

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিষয়টি (কোটা সংস্কার) যেহেতু আদালতে গেছে এবং সেটা এখন বিচারাধীন। সরকার এমন মুহূর্তে কী করতে পারে? হ্যাঁ, অপেক্ষা করতে পারে যে, আদালত থেকে কী পরামর্শ বা রায় আসে, সেটার জানার জন্য অপেক্ষা। সেটাই আমরা এখন করছি।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমার মনে হয়, একটা বিষয় পরিষ্কার করা উচিত। সেটা হলো- যৌক্তিক কথা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার অবশ্যই শুনবে। জনগগণের জন্য যেটা ভালো হয়, সেটা শেখ হাসিনার সরকার করবে।’

‘তবে এটার মনে রাখবেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবে না। সেই আদর্শটা কী? বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কেউ নষ্ট করতে পারবে না। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ অসম্মান করতে পারবে না’ যোগ করেন আইনমন্ত্রী।

আরও পড়ুন