সায়ীদ আলমগীর,কক্সবাজার »
কক্সবাজার সৈকত কিংবা যেকোন পর্যটন স্পটে লোক সমাগম নিয়ন্ত্রণে জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত চকরিয়ায় চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার হারবাং ইনানী রিসোর্ট এলাকায় কক্সবাজার জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এ চেকপোস্ট কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন।
এসপি বলেন, করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য সংক্রমন প্রতিরোধে নিরোপায় হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। পর্যটন রাজধানী হিসেবে কক্সবাজারে পর্যটক, শিক্ষার্থী, পিকনিক পার্টি, কর্পোরেট হাউসগুলোর কনফারেন্সসহ নানা কারণে জনকোলাহল থাকে। বর্তমানে মানবিক আশ্রয়ে থাকা ১১ লাখাধিক রোহিঙ্গার কারণে শতাধিক এনজিওর কর্মীও শহর এবং আশপাশ এলাকায় জমায়েত থাকে। বিকেলে কাজ শেষে এরাও সৈকতে নামলে বালিয়াড়ি পূর্ণ হয়।
‘করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে এমন সব জনসমাবেশ পরিহারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বুধবার বিকেল থেকে সৈকতে জনকোলাহলে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে বাসায় অবস্থানের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, এর পরও লোকজন কক্সবাজারে আসছে জানতে পেরে মহাসড়কের চকরিয়ার হারবাং হোটেল ইনানী রিসোর্ট পয়েন্টে কক্সবাজার জেলা পুলিশের চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টটি ২৪ ঘন্টা সচল থাকবে। শিক্ষার্থীকে কোন অবস্থাতেই ঘুরতে কক্সবাজারে আসতে দেয়া হবেনা। তেমনি পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ পর্যটকদেরও কক্সবাজারে বেড়াতে না আসতে নিরুৎসাহিত করা হবে।
এসপি মাসুদ হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষ হতে কক্সবাজার শহরে বুধবার (১৮ মার্চ) বিকেল হতে মাইকিং ও প্রচারপত্র বিলি করা হচ্ছে। কক্সবাজার শহর, টুরিস্ট স্পট ও আশেপাশের এলাকাগুলো পুলিশ নিয়মিত নজরদারি করবে। ইতিমধ্যে কক্সবাজারে আসা পর্যটক ও অন্যান্যদের দ্রুততম সময়ে কক্সবাজার ত্যাগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সম্ভাব্য এ বিপদের বিষয়ে সকলকে সরকারের সব ধরনের নির্দেশনা মেনে চলার আহবানও জানান তিনি।
এসব বিষয় নিয়ে, কক্সবাজার জেলা পুলিশের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে জনসচেতনতা মূলক একটি পোস্ট দেয়া হয়েছে। পোস্টটি হলো : ‘এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, উদ্ভূত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধকল্পে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা হওয়ায়, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সড়কপথ বা আকাশপথে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বেড়াতে বা শিক্ষাসফরে না আসতে অনুরোধ করা হলো। যদি কোন ছাত্র-ছাত্রী উক্ত অনুরোধ অবজ্ঞা করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন বা শিক্ষাসফরে আসেন তাহলে তাদেরকে কক্সবাজারে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’
‘বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগ সহজে এক ব্যক্তি হতে অন্য ব্যক্তির উপর সংক্রমণ হতে পারে। করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ হতে নিরাপদে থাকার জন্য সমুদ্র পাড়ে জমায়েত না হওয়ার জন্য পর্যটকসহ সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। একই সাথে পর্যটকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে অনুরোধক্রমে:-জেলা পুলিশ, কক্সবাজার।’
আর্থিক ক্ষতি হলেও, প্রশাসনের এসব উদ্যোগের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারাও চান স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পর্যটকরা ভ্রমণ করুক। সবাই মিলে করোনা ভাইরাস প্রতিহত করে, দেশকে এগিয়ে নেওয়া সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন কক্সবাজার হোটেল-মোটেল কর্মকর্তা এসোসিয়েশনের সাংগঠিনিক সম্পাদক রিয়াদ ইফতেখার।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













