২৫ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারে ট্রাক দুর্ঘটনা : মারা গেলেন আহত এডভোকেট ওসমান গণি

কক্সবাজার প্রতিনিধি  »

কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে। দূর্ঘটনায় আহত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী মো. ওসমান গণিও মারা গেছেন।

রবিবার (৭ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহত মো. ওসমান গণি চকরিয়ার বদরখালীর মোক্তার আহমদের ছেলে। তিনি স্বপরিবারে শহরের পূর্ব বাহারছরায় বাস করতেন।

শনিবার (৬ মার্চ) রাত ১১টার দিকে সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কলাতলীর ডলফিন মোড়ে সড়কের পাশে দাঁড়ানো কয়েকটি সিএনজি, টমটম ও ঝুপড়ি দোকানসহ পথচারীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে একজন প্রাণ হারায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে আরো একজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন, কলাতলীর দক্ষিণ আদর্শ গ্রামের মোমেনা বেগম (৬৫) ও রোটার‍্যাক্ট ক্লাব অব ঢাকা আরবানার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন। তিনি স্ত্রী সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলেন।

সর্বশেষ মারা গেলেন কক্সবাজার আদালত পাড়ার পরিচিত আইনজীবী মো. ওসমান গণি।

কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনোয়ার হোসেনের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার রাত ১১ টার দিকে কক্সবাজারমুখী সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি (চট্টমেট্টো-ট-১১-৬৮২৮) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যানবাহন ও পথচারীদের চাপা দেয়। এসময় ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত হন। এঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১০ পথচারী।

আহতদের মাঝে, কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার এডভোকেট ওসমান (৪৫), উখিয়ার কোটবাজার এলাকার আবদুল আমিনের ছেলে জসিম উদ্দীন (২৫), বশরত আলীর ছেলে মুজিব (৪৫), শফিউল্লাহর ছেলে জিকু (৩০), মহেশখালী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে জয়নাল (৩৫), বড় ভাই আবুল হোসেন (৪৫) ও ছেলে রাশেদুল হকের (১৭) নাম পাওয়া গেছে।

আহতদের মাঝে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো ওসমান গণি মারা গেছেন।

দূর্ঘটনার খবর পেয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের নেতৃত্বে একটি টিম উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। আহতদের জন্য রক্তও যোগাড় করার ব্যবস্থা করেন তারা।

রাতেই দূর্ঘটনাস্থলে যান এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা।

দূর্ঘটনার পর সড়কের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কলাতলীর সড়কের ঢালুতে উভয় পাশে নানা ধরণের যানবাহন বেআইনি ভাবে দাঁড়িয়েছিল। বড় বাসগুলো ধীরে নামছে। হঠাৎ বেপরোয়া ভাবে ট্রাকটি এসে সিএনজি, টমটম, ঝুপড়ি দোকান ও পথচারীদের চাপা দেয়। মূহুর্তে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ট্রাক চালক ও হেলপার গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পালিয়ে যান।

ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সোলতান বলেন, টার্মিনাল থাকলেও অদৃশ্য কারণে বাইপাস সড়কের উভয় পাশে কলাতলীর বীচ পয়েন্ট এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের বাসসহ পর্যটকসেবী যানবাহন পার্কিং করে রাখে। ফলে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ও জ্যাম নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাতেও সড়কের উভয়পাশে গাড়ি পার্কিং ছিল। ফলে, নিয়ন্ত্রণহীন ট্রাকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্ম দিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন