কক্সবাজার প্রতিনিধি »
পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিবশত বর্ষে কক্সবাজারবাসীর জন্য এটি অন্যতম উপহার হিসেবে ঘোষণা আসতে পারে, এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতকালে দাবির প্রেক্ষিতে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এ আশ্বাস দেন বলে দাবি করেন এমপি কমল।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে জেলার শিক্ষাঙ্গনে নবদিগন্তের সূচনা হবে। বাস্তবায়ন হবে কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের কাংখিত স্বপ্নের, এমনটাই অভিমত জেলার শিক্ষাবিদ ও সচেতন নেতৃবৃন্দের।
সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলসহ নবঘোষিত ঈদগাঁও থানার কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এমপি কমল কক্সবাজারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুরোধ জানান। দাবির যুক্তিকতা তুলে ধরার পর প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সম্মতি জ্ঞাপন করেন বলে জানান সাক্ষাতে অংশ নেয়া কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু তালেবও।
এ সময় উপস্থিত শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যরিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে এ বিষযে যথাযথ উদ্যোগ নিতেও নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী, উল্লেখ করেন তালেব।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এ আশ্বাসের তথ্য প্রচার পাবার পর জেলাব্যাপী আনন্দের জোয়ার বইছে। জেলার শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষনাকে মুজিব বর্ষে জেলাবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে অবিহিত করেছেন।
কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ফারুখ আহমদ বলেছেন, কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সরকারি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রাণের দাবি ছিলো। যা চাইতে-না চাইতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ দাবি বাস্তবায়নের ঘোষনা দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। এখানে বঙ্গবন্ধু সরকারি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে, জেলার শিক্ষার্থীদের আর অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে ঢাকা-চট্টগ্রাম বা দেশের দূর-দূরান্তে গিয়ে পড়ালেখা করতে হবে না। বরং দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীরাই দীর্ঘতম সমুদ্র শহর তথা স্বাস্থ্যকর এ জেলায় শিক্ষা অর্জনের জন্য ছুটে আসবে।
রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল হক বলেন, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল র্দীর্ঘদিন কক্সবাজার-রামুকে শিক্ষার নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষনা এমপি কমলের শিক্ষার নগরী গড়ার বৃহৎ প্রয়াস।
কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির চৌধুরী হিমু জানান, জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গণমানুষের এ দাবিটি বাস্তবায়নের যে আশ্বাস দিয়েছেন, তা জেলাবাসীর জন্য গৌরবের। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তরের বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত ৮টায় জাতীয় সংসদ ভবনে সাংসদ কমলসহ ঈদগাঁওর নেতৃবৃন্দ ঈদগাঁওকে থানায় রূপান্তর করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তরের জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার জেলাকে সাজিয়ে দিচ্ছি। ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তরের প্রয়োজনীতা আছে কিনা জানতে চাইলে নেতৃবৃন্দ ঈদগাঁওকে উপজেলায় রূপান্তর না করা গেলে সরকারের স্বাস্থ্য-কৃষি সেবা, ফায়ার ষ্টেশনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে এতদঞ্চলের লোকজন বঞ্চিত হচ্ছে উল্লেখ করে উপজেলায় রূপান্তরের দাবী জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার শহর থেকে রামুর দূরত্ব এবং রামু থেকে ঈদগাঁওর দূরত্ব সম্পর্কে জানতে চান। সাংসদ কমল প্রধানমন্ত্রীকে জানান, সদর উপজেলা পরিষদ থেকে ঈদগাঁহ’র দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার হওয়ায় ঈদগাঁওবাসী যাবতীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে অসংখ্যা উপজেলা বাস্তবায়নের দাবী থাকায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়ে যায়। তবুও নেতৃবৃন্দ ঈদগাঁওকে উপজেলায় রুপান্তরের অনুরোধ জানালে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এসময় সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু তালেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির চৌধুরী হিমু, জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ, ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আলম, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর সিদ্দিক, পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক আহম্মেদসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













