কক্সবাজার প্রতিনিধি »
জমির নিয়ে বিরোধে পূর্ব শত্রুতায় হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় জামিন পাওয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে রামুর সাংবাদিক সোয়েব সাঈদের বাড়িতে আবারও হামলা করেছে প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের লোকজন।
হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোয়েব সাঈদ, তার মা রওনক জাহান (৫০), তার গর্ভবতী স্ত্রী আইরিন জাহান ও ভাইসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মাঝে মা রওনক জাহান (৫০) ও স্ত্রী আইরিন জাহানের (২৭) অবস্থা আশংকা জনক।
বুধবার (২৯মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কক্সবাজারের রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসের চর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতদের তাৎক্ষনিক রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে সেখান থেকে মা ও স্ত্রীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। মা রওনক জাহানের মাথায় ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত আইরিন জাহানের জ্ঞান ফিরেনি।
দৈনিক আমাদের সময় ও চট্টগ্রামের পূর্বদেশ পত্রিকার রামু প্রতিনিধি ও কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক কক্সবাজার-এর স্টাফ রিপোটার্র সোয়েব সাঈদ জানান, সন্ধ্যায় ইফতারের পর তার ছোট ভাই রুহুল আমিন মাগরিবের নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় রুহুল বাড়ির উঠানে পৌঁছলেই আগে থেকে ওৎপেতে থাকা সরকারী গেজেটভুক্ত রাজাকার আব্দুল হক প্রকাশ হক সাব-এর ছেলে জামায়াত নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো (৪৫), আবুল আলা (৪০), গোলাম মওলা (৩৯), ভুট্টোর ছেলে আনিস (২৬), আসিফ (২২) এবং মরিচ্যা থেকে আসা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী আকিব, বাহাদুরসহ ২০-৩০জনের সশস্ত্র দল অতির্কিত রুহুলের উপর হামলা চালায়।
এ সময় সোয়েব সাঈদ ও তার মা, স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রুহুলকে উদ্ধার করতে এলে সন্ত্রাসীরা সোয়েব সাঈদের মা রওনক জাহান ও তার সাত মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী আইরিন জাহানসহ সবাইকে লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতরকিত হামলা চালায়। এতে অন্তত ১২জন আহত হয়।
আহত সাংবাদিক সোয়েব আরো জানান, ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাড়ির উঠোনে স্ট্রোক করে হক সাব-এর ছেলে আব্দুল হামিদ খান ভাসানী মারা যান। কিন্তু এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগ এনে সোয়েব সাঈদ, তার ভাই চাচাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করে হক সাবের পরিবার।
সে সময় পুলিশের সুরত হাল রিপোর্টে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া না গেলেও পরে ময়নাতদন্ত করার সময় কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গের লাশ কাটার লোককে (ডোম) মোটা অংকের টাকা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে বুকের হাড় ভেঙ্গে দিয়ে ময়না তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আদালতে দাখিল করেন।
তিনি বলেন, সেই মামলায় গত ১৯ মে সবাই জামিন পান। এতে ক্ষুব্দ হয়ে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটান তারা।
সোয়েব সাঈদ বলেন, আমাদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যা মামলা ছাড়াও চাঁদাবাজি, ছিনতাই, নারী নির্যাতনসহ অন্তত ১২টি মিথ্যা মামলা আমাদের বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে। এমনকি পুলিশের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় হামলার পর উল্টো হক সাব-এর ছেলে যুবলীগ নেতা গোলাম মওলা থানায় গিয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।
রামু থানার ওসি আবুল মনসুর জানান, পূর্ব বিরোধে দুপক্ষের মাঝে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। দুই পক্ষের সংঘর্ষের কথা জানানো হয়েছে। এরপরও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর













