সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »
দেশের আলোচিত হত্যাকাণ্ড মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামী ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে কক্সবাজার কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা কারাগার থেকে রওয়ানা হয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার কারাগারে পৌঁছে তাকে বহনকারী গাড়িটি। এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্বাবধায়ক (সুপার) মো. নেছার আলম।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার নেছার আলম জানান, মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ কক্সবাজার কারাগারেই ছিলেন। কিন্তু দুদকের মামলায় হাজির করতে গত সাত মাস আগে ওনাকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে বিকেলে কক্সবাজার কারাগারে পৌঁছান ওসি প্রদীপকে বহনকারী গাড়ি। সকল আইনী কর্মকান্ড শেষে তাকে কারা অভ্যন্তরে নেয়া হয়েছে। ওসি প্রদীপ ছাড়াও তার একই মামলায় গ্রেফতার বাকি ১৩ জনও এখানে বন্দি রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, গত ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাখেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়েছে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে। এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের করা মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ ছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেফতার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
মামলায় গ্রেফতার ১৪ আসামিকে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উক্ত মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম। মামলার অপর অভিযুক্ত ওসি প্রদীপের অন্যতম সহযোগী কনস্টেবল সাগর দেব এখনো পলাতক রয়েছেন।
অপরদিকে, সাত মাস আগে দুদকের একটি দুর্নীতি মামলায় হাজির করতে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয় ওসি প্রদীপকে। সে মামলার নানা কার্যক্রম শেষে দীর্ঘ সাত মাস পর আবারও ওসি প্রদীপকে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/এআই













